ইসরায়েলের নয়া কৌশল: প্রতিবেশী দেশগুলোকে দুর্বল করতে হামলা?

শিরোনাম: ইসরায়েলের আগ্রাসী নীতি: লেবানন ও সিরিয়ায় অস্থিতিশীলতা তৈরির অভিযোগ

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে আবারও বড় বাধা সৃষ্টি করছে ইসরায়েল। বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিবেশী দেশ লেবানন ও সিরিয়াকে দুর্বল করে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখতেই এমনটা করছে তারা।

সম্প্রতি আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরির অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল একদিকে যেমন লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে, তেমনি সিরিয়ার অভ্যন্তরেও সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য হলো, এই দুটি দেশকে দুর্বল রাখা, যাতে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে।

লেবাননের পরিস্থিতি বেশ নাজুক। দীর্ঘদিন ধরে চলা অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিরতা লেবাননকে দুর্বল করে দিয়েছে। এর ওপর ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন দেশটির জন্য নতুন সংকট তৈরি করেছে।

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও, ইসরায়েল প্রায়ই লেবাননের সীমান্ত অঞ্চলে আক্রমণ চালাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে, ইসরায়েলি হামলায় গ্রামের পর গ্রাম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এবং বেসামরিক মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

সিরিয়ার অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। কয়েক বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ দেশটির অর্থনীতি ও সামাজিক কাঠামোকে দুর্বল করে দিয়েছে। বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর সেখানে নতুন সরকার গঠিত হলেও, ইসরায়েল তাদের প্রতি কোনো সহযোগিতা দেখাচ্ছে না।

বরং সিরিয়ার সামরিক অবকাঠামোতে আঘাত হানছে, যা দেশটির অস্থিতিশীলতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইসরায়েল চায় সিরিয়া দুর্বল থাকুক এবং বিভাজিত হোক। তারা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে, যেখানে সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে তাদের প্রভাব বজায় থাকবে এবং তাদের আকাশসীমায় অবাধ বিচরণ করতে পারবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মার্চ মাসে সিরিয়ার অভ্যন্তরে ইসরায়েলি বিমান হামলা ও স্থল অভিযান বেড়েছে। এতে সেখানকার সাধারণ মানুষের জীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সম্প্রতি দেইরা অঞ্চলের কুয়া গ্রামে ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণের প্রতিবাদ করায় অন্তত ছয়জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল সম্ভবত এই অঞ্চলের ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধ’ চায়। কারণ, এতে তাদের ক্ষমতা আরও সুসংহত হবে।

লেবানন ও সিরিয়ার দুর্বলতা ইসরায়েলের জন্য একটি সুবিধাজনক পরিস্থিতি তৈরি করে। তবে, এর ফলে ওই অঞ্চলের শান্তি প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকে ইসরায়েলের আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *