আতঙ্কে বিশ্ব! ট্রাম্পের শুল্কের কারণে কী হচ্ছে?

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা, বাংলাদেশের জন্য কী বার্তা?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি ঘোষণার পর বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। গত ২ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে তিনি সব ধরনের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন।

এর কয়েক দিন পরেই, বিশেষ করে চীন থেকে আমদানির ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়। এই সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ, বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে বড় দরপতন দেখা দিয়েছে, সেই সাথে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিনিময় হারেও এসেছে পরিবর্তন।

এই ঘোষণার পর পরই, মার্কিন শেয়ার বাজারে বড় ধরনের ক্ষতি হয়। দুই দিনের ব্যবধানে প্রায় ৬.৬ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ বাজার থেকে উড়ে যায়। শুধু তাই নয়, বিশ্বজুড়ে ইক্যুইটি ভ্যালু বা শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশের মোট জিডিপির চেয়েও বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিশ্বজুড়ে মন্দা দেখা দিতে পারে।

শেয়ার বাজারের পাশাপাশি, সোনার দামেও অস্থিরতা দেখা গেছে। সাধারণত, অনিশ্চয়তার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা সোনা কিনে থাকেন, ফলে এর দাম বাড়ে। কিন্তু ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর সোনার বাজারেও কিছুটা পরিবর্তন দেখা যায়।

শুরুতে দাম বাড়লেও পরে তা কমে যায়। অপরিশোধিত তেলের দামও কমেছে, যা অর্থনীতির জন্য ভালো লক্ষণ নয়।

বিভিন্ন দেশের মুদ্রার বিনিময় হারেও এর প্রভাব পড়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েন ও ইউরোর মতো প্রধান মুদ্রাগুলোর দাম কমেছে। চীনের মুদ্রা ইউয়ানের দামও কমেছে, যা গত ১৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

অন্যান্য দেশের মধ্যে, ব্রিটিশ পাউন্ড, রাশিয়ান রুবল, ভারতীয় রুপি, জাপানি ইয়েন, ব্রাজিলিয়ান রিয়েল, মেক্সিকান peso এবং দক্ষিণ আফ্রিকার র‍্যান্ডের দামেও পরিবর্তন এসেছে।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আসতে পারে। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, আগামীতে মন্দা আসার সম্ভাবনা প্রায় ৬০ শতাংশ, আবার কারো কারো মতে তা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ।

এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত আমদানি-নির্ভর। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বাড়লে, তা দেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে। এছাড়া, বিভিন্ন দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন হলে, আমাদের বৈদেশিক বাণিজ্যেও সমস্যা হতে পারে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *