মার্কিন সিনেটর ইলন মাস্ককে লক্ষ্য করে স্বার্থের সংঘাত বিষয়ক একটি বিল উত্থাপন করেছেন। ডেমোক্রেটিক সিনেটর জীন শাহীন এই বিলটি তৈরি করেছেন, যার মূল উদ্দেশ্য হলো বিশেষ সরকারি কর্মচারী-নিয়োজিত কোনো কোম্পানির সঙ্গে সরকারি চুক্তি বা অনুদান দেওয়া বন্ধ করা।
বিলটির লক্ষ্য হলো মূলত স্পেসএক্স (SpaceX) এবং টেসলার (Tesla) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) এলন মাস্ক। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে মাস্ককে হোয়াইট হাউসে বিশেষ সরকারি কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
এই প্রেক্ষাপটে শাহীন মনে করেন, সরকারি পদে থেকে কোনো ব্যক্তি যাতে ব্যক্তিগত সুবিধা অর্জন করতে না পারেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার।
প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, কোনো নির্বাহী সংস্থা এমন কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে না, যেখানে বিশেষ সরকারি কর্মচারী ৫ শতাংশের বেশি মালিকানার সঙ্গে জড়িত। উল্লেখ্য, বিশেষ সরকারি কর্মচারীরা সীমিত সময়ের জন্য দায়িত্ব পালন করেন এবং কিছু আর্থিক ঘোষণার নিয়ম থেকে অব্যাহতি পান।
এই বিল নিয়ে রিপাবলিকান সিনেটরদের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না, কারণ তাঁরা মাস্কের ক্ষমতা কমানো বা তাঁর কার্যকলাপের স্বচ্ছতা বাড়ানোর পক্ষে নন। এমনকি, ট্রাম্পও মাস্কের সমালোচনার বিরুদ্ধে তাঁর পক্ষ নিয়েছেন। ডেমোক্র্যাট এবং বিভিন্ন নৈতিক সংগঠন প্রায়ই মাস্কের বিভিন্ন স্বার্থের সংঘাত নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এলন মাস্কের স্বার্থের সংঘাত প্রত্যেক আমেরিকানের জন্য উদ্বেগের কারণ হওয়া উচিত। মাস্ক বর্তমানে তাঁর নিজস্ব ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগ’ (Doge) এবং প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাঁর কোম্পানি, বিশেষ করে স্পেসএক্স এবং স্টারলিংকের (Starlink) সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে বড় অঙ্কের চুক্তি রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, প্রাক্তন সরকারি কর্মচারীরা সতর্ক করেছেন যে, মাস্ক তাঁর ব্যক্তিগত কোম্পানিগুলোকে আরও শক্তিশালী করার জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন। শোনা যাচ্ছে, স্টারলিংক বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, প্রতিনিধি পরিষদের তদারকি কমিটি হোয়াইট হাউসে পাঠানো স্টারলিংকের ব্যবহারের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এসব অভিযোগের বাইরে, মাস্কের কোম্পানিগুলো সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের নিয়ন্ত্রক বিষয়ক লড়াইয়েও জড়িত। ডেমোক্রেটিক আইনপ্রণেতাদের পাশাপাশি, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও সরকারি নজরদারি সংস্থা মাস্কের বিরুদ্ধে ফেডারেল নৈতিকতা, গোপনীয়তা এবং স্বচ্ছতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান