মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, অভিবাসন সংক্রান্ত একটি পুরনো আইনের অধীনে কিছু ভেনেজুয়েলীয় নাগরিককে তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত করেছেন নিউ ইয়র্ক এবং টেক্সাসের ফেডারেল আদালত। বুধবার এই বিষয়ে আদালতের পক্ষ থেকে নির্দেশ জারি করা হয়।
আদালতের এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ভেনেজুয়েলার কয়েকজন নাগরিক, যারা বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে ছিলেন, তারা ‘অ্যালিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ (Alien Enemies Act) নামক একটি আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছেন। এই আইনটি মূলত বিদেশি শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের সময় এটিকে অভিবাসন বিতাড়নের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
এই আইনের অধীনে, অভিযুক্ত গ্যাং সদস্যদের যথাযথ শুনানির সুযোগ না দিয়েই বিতাড়িত করার অভিযোগ রয়েছে।
আদালতের নথি থেকে জানা যায়, টেক্সাসের বিচারক, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিয়োগপ্রাপ্ত, ফার্নান্দো রদ্রিগেজ জুনিয়র, সরকারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন যেন ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের অন্য কোথাও স্থানান্তর বা বিতাড়িত না করা হয়। এই নির্দেশটি আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত বহাল থাকবে এবং শুক্রবার শুনানির পর এর মেয়াদ বাড়ানো হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
টেক্সাসের একটি মামলায়, জে.এ.ভি. নামের একজন ভেনেজুয়েলার নাগরিককে নিয়ে আসা হয়েছে, যিনি বর্তমানে টেক্সাসের এল ভ্যালি ডিটেনশন সেন্টারে আটক আছেন। জানা যায়, ১৫ মার্চ তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।
জে.এ.ভি.’র আইনজীবীরা তার অতীতের কথা উল্লেখ করে একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। সেই আবেদনে তিনি এইচআইভি পজিটিভ এবং গ্যাং সদস্য নন বলেও দাবি করেছেন।
জে.এ.ভি.’র আইনজীবীর দাবি, তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন, কারণ তিনি তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং যৌন অভিমুখীতার কারণে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে ছিলেন।
আরেকটি ঘটনায়, নিউ ইয়র্কের বিচারক অ্যালভিন হেলারস্টাইন, যিনি বিল ক্লিনটনের সময় নিয়োগ পেয়েছিলেন, ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের বিতাড়ন অথবা এই জেলার বাইরে স্থানান্তরের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
আদালতের এই সিদ্ধান্তগুলো মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মামলাগুলো অভিবাসন এবং আশ্রয় প্রার্থীদের অধিকারের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্যও প্রাসঙ্গিক।
কারণ, অনেক সময় মানুষ রাজনৈতিক অথবা অন্যান্য কারণে নিজেদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় এবং অন্য দেশে আশ্রয় নেয়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন