যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ওমানের মধ্যস্থতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের কর্মকর্তাদের মধ্যে আসন্ন আলোচনার প্রাক্কালে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইরানের পাঁচটি সংস্থা এবং একজন ব্যক্তি রয়েছেন, যারা দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা এবং এর অধীনস্থ ইরান সেন্ট্রিফিউজ টেকনোলজি কোম্পানি, থোরিয়াম পাওয়ার কোম্পানি, পার্স রিঅ্যাক্টরস কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি এবং আজারাব ইন্ডাস্ট্রিজ কোং।
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ইরানি শাসকদের বেপরোয়াভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুতর হুমকি এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য বিপদ ডেকে আনছে। ট্রেজারি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং তাদের বৃহত্তর অস্থিতিশীল এজেন্ডা বানচাল করতে আমাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে যাবে।”
এই নিষেধাজ্ঞা এমন এক সময়ে এলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার জন্য শীর্ষস্থানীয় দূত পাঠাচ্ছেন।
একইসঙ্গে তিনি ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেন, আলোচনা সফল না হলে তারা “বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে” পড়বে।
অন্যদিকে, তেহরান নিশ্চিত করেছে যে আলোচনা হবে, তবে তারা জানিয়েছে এটি মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে পরোক্ষ আলোচনা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন, কারণ তেহরান একটি কার্যকরী পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বিশ্ব শক্তি ইরানের সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদী পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করে।
এই চুক্তির শর্ত ছিল, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করা হবে এবং এর বিনিময়ে তেহানের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
তবে, ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেন।
তিনি এই চুক্তিকে “এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ চুক্তি” হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
পরে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে ২০২১ সালে ইরানের সঙ্গে এই চুক্তি পুনর্বহালের জন্য ভিয়েনায় পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
কিন্তু সেই আলোচনা এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে তেহরানের অন্যান্য আলোচনা কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতি, বিশেষ করে জ্বালানি বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস