আতঙ্কে বিশ্ববাজার! ট্রাম্পের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্তে কি তবে মুক্তি?

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে পরিবর্তন, বিশ্ব বাজারে স্বস্তি, তবে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা অব্যাহত।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের উপর নতুন করে আরোপিত শুল্ক কিছুদিনের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিশ্ব শেয়ার বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এই আকস্মিক সিদ্ধান্তের ফলে, বিশেষ করে বৃহস্পতিবার এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার বাজারে উল্লেখযোগ্য উত্থান দেখা যায়।

যদিও একই সময়ে, ট্রাম্প চীন-আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র করেছেন, যা উদ্বেগের কারণ হয়েছে।

গত বুধবার ট্রাম্পের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শেয়ার বাজারগুলো তেজিভাব দেখাতে শুরু করে। এর আগে নতুন শুল্ক আরোপের ফলে বাজারের অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, যা কোভিড-১৯ মহামারীর শুরুর দিকের পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দেয়।

এই অস্থিরতার কারণে বাজার থেকে ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ হারিয়ে গিয়েছিল। এমনকি মার্কিন বন্ডের ফলনও বেড়ে গিয়েছিল, যা ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের পর হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি নাকি তাদের পূর্বপরিকল্পিত কৌশল ছিল এবং এর মাধ্যমে ‘চুক্তি করার কৌশল’ প্রদর্শন করা হয়েছে। তবে, ডেমোক্রেটিক সিনেটর অ্যাডাম শিফ এই ঘটনাকে বাজার কারসাজির একটি উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত করে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “এই ধরনের নীতি পরিবর্তনের ফলে অভ্যন্তরীণ ব্যবসায়ীদের সুবিধা হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়।”

বাজারের এই উত্থানের মধ্যে, ইউরোপীয় ফিউচার মার্কেটেও ভালো ফল দেখা গেলেও, মার্কিন শেয়ার বাজারের ভবিষ্যৎ কিছুটা নিম্নমুখী ছিল। বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আসার আশঙ্কায় তেলের দামও কমে যায়।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প বিভিন্ন সময়ে বাণিজ্য অংশীদারদের উপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন, তবে শেষ মুহূর্তে কিছু সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। তার এই নীতি বিশ্বনেতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করেছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, এই শুল্ক স্থগিত করার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশগুলোকে আলোচনার টেবিলে আনা। তবে ট্রাম্প পরে ইঙ্গিত দেন যে, গত ২ এপ্রিলের ঘোষণার পর বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তাও তার সিদ্ধান্তের উপর প্রভাব ফেলেছে।

যদিও ট্রাম্প তার নীতির পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছিলেন, তবে বুধবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আপনাকে নমনীয় হতে হবে।”

অন্যদিকে, ট্রাম্প চীনের উপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন। চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম পণ্য সরবরাহকারী দেশ।

বুধবার চীনের উপর শুল্কের পরিমাণ ১০৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেন তিনি। এর জবাবে চীনও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানান, তারা কোনো ধরনের উসকানির কাছে নতি স্বীকার করবে না।

ট্রাম্প বলেছেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে একটি সমাধান সম্ভব। তবে, তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনাকে তারা অগ্রাধিকার দেবেন।

এর মধ্যে ভিয়েতনাম, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *