মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন মোড় নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন চীনের উপর আরও বেশি শুল্ক আরোপ করার পর, বেইজিং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে অন্যান্য দেশের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় চীনও তাদের বাণিজ্য নীতি আরও কঠোর করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির উপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে।
এই পরিস্থিতিতে, চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংগঠন (আসিয়ান)-এর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে। চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লেয়েন-এর মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে, যেখানে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ইইউ-এর সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং শিল্পখাতে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।
তবে, চীনের এই প্রচেষ্টায় সবাই যে সাড়া দিচ্ছে, তা নয়। কিছু দেশ, যেমন অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির বিষয়ে সরাসরি কোনো পক্ষ নিতে রাজি নয়।
তারা বলছে, মুক্ত ও ন্যায্য বাণিজ্য তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। ভারতের পক্ষ থেকেও চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো কিছু দেশ এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে কিছুটা বিপাকে পড়েছে। কারণ, তারা একদিকে যেমন চীনের কাছ থেকে উৎপাদন সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তাদের পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এই দেশগুলো এরই মধ্যে সীমিত মুনাফায় ব্যবসা করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদিও প্রথমে শুল্ক কমানোর কোনো সম্ভাবনা দেখাননি, তবে এখন তিনি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করেছেন।
এর ফলে, যেসব দেশের উপর আগে শুল্ক আরোপ করা হয়নি, তাদের উপর আপাতত ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকছে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের উপরও পড়তে পারে। কারণ, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে।
বিশেষ করে, তৈরি পোশাক ও অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস