কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী কে? পিয়েরে পলিভার সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

কানাডার রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তনের হাওয়া: পিয়ের পয়েলিভরের উত্থান ও ভবিষ্যৎ।

কানাডার রাজনীতিতে এখন পরিবর্তনের সুর। একদিকে যখন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগ করেছেন, অন্যদিকে আলোচনায় উঠে এসেছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়ের পয়েলিভর।

সম্প্রতি জনমত সমীক্ষায় তার জনপ্রিয়তা কিছুটা কমলেও, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচনে এখনও অনেক কিছু নির্ভর করছে এই নেতার উপর।

পিয়ের পয়েলিভর দীর্ঘদিন ধরে কানাডার রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি মূলত সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি এবং সরকারের নীতি নিয়ে সোচ্চার ছিলেন।

বিশেষ করে, ট্রুডো সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে তিনি দ্রুত পরিচিতি লাভ করেন। তার বাগ্মিতা এবং রাজনৈতিক কৌশল তাকে দলের ভেতরে ও বাইরে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পয়েলিভরের উত্থানের পেছনে কাজ করেছে কিছু বিশেষ কারণ। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে অসন্তোষ ছিল, পয়েলিভর তা কাজে লাগিয়েছেন।

তিনি সরকারের কার্বন ট্যাক্স নীতির বিরোধিতা করে জনগণের সমর্থন আদায় করেছেন। “ট্যাক্স কমাও” – এই শ্লোগান তার জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ ছিল।

তবে, পয়েলিভরের কিছু বিতর্কিত বিষয়ও রয়েছে। তিনি “ফ্রিডম কনভয়” আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন, যা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং সরকারের অন্যান্য নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছিল।

এছাড়াও, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি বিভিন্ন সময়ে রক্ষণশীল এবং ডানপন্থী আদর্শের প্রতি সমর্থন জুগিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আসন্ন নির্বাচনে পিয়ের পয়েলিভরের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য বাণিজ্য শুল্ক আরোপের হুমকির মুখে, কানাডার মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধ জেগে উঠেছে।

এই পরিস্থিতিতে, পয়েলিভর কিভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

পিয়ের পয়েলিভর এর রাজনৈতিক জীবন বেশ দীর্ঘ। তিনি ক্যালগারিতে বেড়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।

এরপর তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি প্রথম নির্বাচনে জয়লাভ করেন এবং তারপর থেকে তিনি অটোয়ার একটি নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছেন।

কানাডার রাজনীতিতে এই মুহূর্তে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ট্রুডোর পদত্যাগ এবং নতুন নেতৃত্বের আগমন, সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা – সব মিলিয়ে পিয়ের পয়েলিভরের জন্য সামনের পথটা সহজ হবে না।

তবে, তার রাজনৈতিক দক্ষতা এবং জনগণের সমর্থন তাকে নির্বাচনে কতটা সুবিধা এনে দেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *