পাকিস্তানের নাগরিকত্ব ত্যাগ করা কানাডার নাগরিক, তাহাউর হুসেন রানাকে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অবশেষে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সশস্ত্র প্রহরায় তাকে ভারতের রাজধানী দিল্লির কাছে একটি সামরিক ঘাঁটিতে আনা হয়। ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (National Investigation Agency – NIA) জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তাহাউর রানাকে ভারতে ফিরিয়ে আনতে সফল হয়েছে।
৬৪ বছর বয়সী রানাকে এখন আটক রাখা হয়েছে এবং বিচারের মুখোমুখি করা হবে। ভারত সরকারের অভিযোগ, রানা পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার (LeT) সদস্য ছিলেন এবং মুম্বাই হামলার পরিকল্পনায় সহায়তা করেছেন।
জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে লস্কর-ই-তৈয়বাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জানা যায়, রানার দীর্ঘদিনের বন্ধু ডেভিড কোলম্যান হেডলি, যিনি লস্কর-ই-তৈয়বার জঙ্গিদের সাহায্য করার জন্য ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, তিনিও এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হেডলি মুম্বাইয়ে হামলার স্থানগুলো চিহ্নিত করতে সহায়তা করেছিলেন।
যদিও রানা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে ভারতের দাবি, তিনি এই হামলার অন্যতম মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। এনআইএ-এর মতে, রানা ডেভিড হেডলি এবং লস্কর-ই-তৈয়বা ও হরকত-উল-মুজাহিদিন ইসলামীর সদস্যদের সঙ্গে মিলে এই ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্র করেন।
তাহাউর হুসেন রানা, যিনি একসময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর চিকিৎসা বিভাগে কাজ করতেন, ১৯৯৭ সালে কানাডায় পাড়ি জমান।
এরপর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং শিকাগোতে একটি ল ফার্ম ও একটি কসাইখানাসহ বিভিন্ন ব্যবসা শুরু করেন। ২০০৯ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত রানাকে মুম্বাই হামলায় সহায়তা করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে মুক্তি দিলেও, ডেনমার্কে হামলার পরিকল্পনার জন্য লস্কর-ই-তৈয়বাকে সহায়তার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে।
এই মামলায় তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
ফেব্রুয়ারিতে মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেছিলেন, “অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হলো এবং বিচার সম্পন্ন হবে।”
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান