বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ গলফ টুর্নামেন্ট, ‘দ্য মাস্টার্স’-এ মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ। আধুনিক যুগে যখন স্মার্টফোন ছাড়া জীবন প্রায় অচল, তখন এই টুর্নামেন্টের কর্তৃপক্ষ দর্শকদের জন্য পুরোনো দিনের পাবলিক ফোন বুথ-এর ব্যবস্থা রেখেছে।
বিষয়টি অনেকের কাছেই বেশ কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের অগাস্টা ন্যাশনাল গলফ ক্লাবে অনুষ্ঠিত হওয়া এই টুর্নামেন্টে আসা তরুণ প্রজন্মের কাছে পাবলিক ফোন যেন এক অচেনা জগৎ। তারা হয়তো আগে কখনো এমন ফোন দেখেনি।
তাদের অনেকের কাছেই এটা বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা। অন্যদিকে, প্রবীণদের কাছে, বিশেষ করে যাদের শৈশব কেটেছে টেলিফোনের যুগে, এটি নস্টালজিক অনুভূতি নিয়ে আসে।
টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে, দর্শকদের পকেট বা ব্যাগে ফোন নেই দেখে অনেকেই খানিকটা অস্বস্তি বোধ করেন। তারা যেন তাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশটি খুঁজে পাচ্ছেন না।
কেউ হয়তো পকেট হাতড়ে হতাশ হয়ে বলছেন, “ফোনটা গাড়িতে ফেলে এসেছি!”
পাবলিক ফোন বুথে লম্বা লাইন দেখা যায়। অনেক সময় ১০ জন পর্যন্ত ফোন করার জন্য অপেক্ষা করেন।
ফোন ব্যবহারের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা, অফিসের খবর নেওয়া অথবা শেয়ার বাজারে কী ঘটছে সে সম্পর্কে অবগত থাকা।
তবে, মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার এই সুযোগ অনেকের কাছে মুক্তিদায়ক মনে হয়েছে। তারা যেন প্রকৃতির কাছাকাছি এসে বর্তমান মুহূর্তকে উপভোগ করছেন।
কেউ কেউ জানিয়েছেন, ফোন না থাকার কারণে তাঁরা খেলা উপভোগ করতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারছেন।
অনেকের মতে, জরুরি কিছু তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এই পাবলিক ফোনগুলো বেশ কাজে আসে। যেমন, স্টক মার্কেটের খবর রাখা বা বাড়ির আপনজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করা।
আবার কেউ কেউ জানিয়েছেন, পুরনো দিনের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য এই ব্যবস্থা বেশ উপভোগ্য।
এই টুর্নামেন্টে আসা দর্শকেরা যখন ফোন করেন, তখন তাদের পরিচয় হিসেবে ‘অগাস্টা ন্যাশনাল গলফ ক্লাব’-এর নাম ভেসে ওঠে।
অনেকে বিষয়টি দেখে বেশ অবাক হন এবং মজা পান।
মোটকথা, আধুনিক প্রযুক্তির যুগে, যেখানে মানুষ সবসময় মোবাইল ফোনের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে এই টুর্নামেন্টে পুরোনো দিনের পাবলিক ফোনের ব্যবহার সত্যিই একটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা।
একদিকে যেমন প্রযুক্তির প্রতি মানুষের নির্ভরশীলতা, অন্যদিকে তেমনই প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার আনন্দ—সবকিছু মিলে এই টুর্নামেন্ট যেন এক অন্যরকম জগৎ তৈরি করে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস