মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে অস্থিরতা: ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নিয়ে ওয়াল স্ট্রিটের দ্বিধা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য নতুন অর্থনৈতিক পদক্ষেপগুলো নিয়ে এখন সন্দিহান প্রভাবশালী বিনিয়োগকারীরা। ওয়াল স্ট্রিটের বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শুল্ক পরিবর্তন, কর কমানো এবং নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার মতো বিষয়গুলো সম্ভবত কোনো সুচিন্তিত পরিকল্পনার অংশ নয়, বরং পরিস্থিতির চাপে নেওয়া কিছু তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে শেয়ার বাজারে।
বৃহস্পতিবার শেয়ার বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়। ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ১,২০০ পয়েন্টের বেশি কমে যায়, আর এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচকও নিম্নমুখী হয়। তেলের দাম ব্যারেল প্রতি প্রায় ৬০ ডলারে নেমে আসে, যা বুধবারের লাভের পুরোটাই মুছে দেয়। বাজার বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে, যা চাহিদাকে আরও কমিয়ে দেবে।
ওয়েস্টউড ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড্যানিয়েল আলপার্ট জানিয়েছেন, বিনিয়োগকারীরা এখন তাদের বিনিয়োগের ঝুঁকি-সুবিধা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছেন না। তাদের মধ্যে একটা দ্বিধা কাজ করছে।
আগের সপ্তাহে শুল্কের সিদ্ধান্ত স্থগিত করার পর, বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছিল এবং ট্রাম্প প্রশাসন এর কৃতিত্ব দাবি করেছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে বিনিয়োগকারীরা নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হন। একদিকে যেমন গত মাসের ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) প্রতিবেদন প্রকাশ হয়, যেখানে মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত কমেছে বলে জানা যায়। কিন্তু এরপরেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সেই উৎসাহ দেখা যায়নি। এমনকি ট্রাম্পের বাজেট পরিকল্পনা, যেখানে কর এবং নিয়ন্ত্রণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটিও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে পারেনি।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিতে দ্রুত পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করেছে। তারা মনে করছেন, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে যদি জটিল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিগুলো সম্পন্ন করা না যায়, তাহলে পরিস্থিতি আবারও একই রকম হতে পারে।
ওয়াল স্ট্রিটে এই অস্থিরতা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ, এর ফলে বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসতে পারে। যদি বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেয়, তবে তা রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ কমে গেলে, দেশের উন্নয়ন প্রকল্পেও সমস্যা হতে পারে। তাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির এই গতিবিধির দিকে আমাদের তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন