যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ভুলভাবে বিতাড়িত হওয়া এক সালভাদরীয় নাগরিককে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে এটি একটি ছোট জয় হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
আদালতের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অভিবাসন বিষয়ক বিতর্ককে নতুন করে সামনে এনেছে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, কিলমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়া নামের ২৯ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে বসবাস করতেন।
গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ অভিবাসন বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে তাকে এল সালভাদরের একটি কারাগারে পাঠানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের আইনজীবীরা পরে স্বীকার করেন, গার্সিয়াকে ‘প্রশাসনিক ত্রুটির’ কারণে বিতাড়িত করা হয়েছিল।
গার্সিয়া একজন মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেছেন। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে, আদালত সরকারের প্রতি নির্দেশ দেয়, গার্সিয়াকে এল সালভাদরের কারাগার থেকে মুক্তি দিতে হবে এবং তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
একইসঙ্গে, তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর আগে তার মামলার যে প্রক্রিয়া ছিল, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে গার্সিয়ার আইনজীবী সাইমন স্যান্ডোভাল-মোশেনবার্গ বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে।’ ২০১৯ সাল থেকে গার্সিয়া যুক্তরাষ্ট্রে আইনি সুরক্ষার অধীনে বসবাস করছিলেন।
আদালত রায় দেয়, তাকে তার নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলে তিনি ক্ষতির শিকার হতে পারেন।
বিতাড়িত করার পর গার্সিয়াকে কুখ্যাত সিইসিওটি (CECOT) কারাগারে বন্দী করা হয়।
নিম্ন আদালত এর আগে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে সোমবার মধ্যরাতের মধ্যে তাকে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দিয়েছিল।
তবে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের জরুরি আবেদনের পর সেই নির্দেশ স্থগিত করে দেয়।
সরকার যুক্তি দেয়, গার্সিয়া সালভাদরীয় গ্যাং এমএস-১৩ এর সদস্য। যদিও নিম্ন আদালত এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পায়নি।
হোয়াইট হাউস, সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইয়িব বুকেলের সঙ্গে একটি চুক্তির ঘোষণা করেছে, যেখানে ৬ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যদের অতি-নিরাপদ কারাগারে বন্দী রাখার কথা বলা হয়েছে।
আদালত জানায়, নিম্ন আদালতের নির্দেশ এখনো বহাল রয়েছে। তবে, নিম্ন আদালতকে পররাষ্ট্র বিষয়ক কর্মকাণ্ডে নির্বাহী বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তাদের আদেশ স্পষ্ট করতে হবে।
বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেয়র, এলেনা কাগান এবং কেতানজি ব্রাউন জ্যাকসন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, গার্সিয়াকে এল সালভাদরে পাঠানোর কোনো আইনগত ভিত্তি ছিল না।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, সিইসিওটিতে পাঠানো সকল ব্যক্তির তথ্য প্রকাশ করতে হবে এবং তাদের বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দিতে হবে।
একইসঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্র ও এল সালভাদর সরকারের বিতাড়িতদের প্রতি ‘নিষ্ঠুর’ আচরণের নিন্দা জানানো হয়।
সম্প্রতি, সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পকে ১৮ শতকের একটি যুদ্ধকালীন আইনের অধীনে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের বিতাড়ন চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা