চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হচ্ছে, দুই দেশই একে অপরের পণ্যের ওপর শুল্কের বোঝা বাড়াচ্ছে। বেইজিং সম্প্রতি মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে, যার প্রতিক্রিয়ায় চীনের বিরুদ্ধেও একই পদক্ষেপ নিয়েছে ওয়াশিংটন।
এই পরিস্থিতিতে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, তারা ভয় পায় না।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বাণিজ্য যুদ্ধের এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে বৈঠকের সময় চীনের দৃঢ় অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
শি জিনপিং জোর দিয়ে বলেন, চীন আত্মনির্ভরশীলতার ওপর বিশ্বাস রাখে এবং কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলা এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারেও বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে এবং বিশ্বজুড়ে একটি অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই বাণিজ্য যুদ্ধ উভয় দেশের জন্যই ক্ষতিকর এবং বিশ্বকে বিভক্ত করে দেবে।
বাণিজ্য যুদ্ধের এই পরিস্থিতিতে চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে। শি জিনপিং স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও সফর করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়া সহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাইছে চীন। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলা করা এবং বিশ্ব বাণিজ্যকে স্থিতিশীল রাখা।
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। অন্যদিকে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের ‘একতরফা বাণিজ্য নীতির’ সমালোচনা করে আসছে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের ওপর এখনই দৃশ্যমান না হলেও, এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে অনেক অর্থনীতিবিদ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে পরিবর্তন আসতে পারে। তাই, বাণিজ্য যুদ্ধের গতিবিধির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা এবং দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন