ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির অন্দরে: শুল্ক এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি প্রায়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে, বিশেষ করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে। এই নীতিগুলো কেবল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকেই প্রভাবিত করে না, বরং এর প্রভাব সারা বিশ্বজুড়ে অনুভূত হয়, যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতিও।
সম্প্রতি, ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরে বাণিজ্য নীতি নিয়ে মতবিরোধের কিছু চিত্র উঠে এসেছে, যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
ট্রাম্পের বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টাদের মধ্যে নীতির প্রশ্নে বিভেদ সবসময়ই বিদ্যমান ছিল।
অন্যদিকে, ছিলেন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট, যিনি তুলনামূলকভাবে নমনীয় নীতি অবলম্বনের পক্ষপাতী ছিলেন।
এই দুই পক্ষের মধ্যেকার দ্বন্দ্বে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়েছে।
শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ট্রাম্প প্রায়ই তার উপদেষ্টাদের পরামর্শের চেয়ে নিজের ধারণাকে বেশি গুরুত্ব দিতেন।
তিনি মনে করতেন, বিশেষজ্ঞদের তুলনায় তার নিজস্ব উপলব্ধি সঠিক। এই মানসিকতার কারণে, বিভিন্ন সময়ে শুল্ক আরোপ এবং তা প্রত্যাহারের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে বাজারের অস্থিরতা তৈরি করেছে।
যেমন, একবার ট্রাম্প শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর, শেয়ার বাজারে দরপতন শুরু হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায়, তিনি দ্রুত সুর নরম করেন এবং কিছু শুল্কের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। এই ঘটনাটি বাণিজ্য নীতির ক্ষেত্রে তার উপদেষ্টাদের প্রভাব এবং বাজারের চাপকে স্পষ্ট করে তোলে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি পরিবর্তনের ফলে দেশের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব।
শুল্ক বৃদ্ধি পেলে, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের চাহিদা কমতে পারে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একটি প্রধান বাজার।
অন্যদিকে, আমদানি পণ্যের দাম বাড়লে, তা দেশের বাজারে মূল্যস্ফীতি ঘটাতে পারে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য প্রয়োজন একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতির পরিবর্তনের দিকে গভীর নজর রাখা এবং সেই অনুযায়ী দেশের বাণিজ্য কৌশল নির্ধারণ করা অপরিহার্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের উচিত হবে বিকল্প বাজার খুঁজে বের করা এবং বাণিজ্য চুক্তিগুলোকে শক্তিশালী করা।
একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকার জন্য পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানো জরুরি।
পরিশেষে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির অন্দরের এই ঘটনাপ্রবাহ বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা।
দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে হলে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন