**মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি নীতিতে পরিবর্তনের ঢেউ, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে প্রভাবের সম্ভাবনা**
যুক্তরাষ্ট্র সরকার চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পাশাপাশি, ছোট প্যাকেজের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুযোগও সীমিত করার পরিকল্পনা চলছে।
এই দুই পদক্ষেপের সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বিশ্বজুড়ে পোশাক শিল্পের ওপর, এবং এর ব্যতিক্রম হবে না আমাদের দেশ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পও (আরএমজি)।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, স্বল্প মূল্যের পোশাক প্রস্তুতকারক যেমন Shein এবং Temu-র মতো কোম্পানিগুলোর ব্যবসা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ, এখন থেকে নির্দিষ্ট মূল্যের বেশি চীনা পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করলে অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে।
আগে কম দামের পণ্য শুল্কমুক্তভাবে প্রবেশের যে সুযোগ পেত, তা সীমিত করার ফলে তাদের পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
অন্যদিকে, পুরাতন পোশাকের ব্যবসা বা ‘সেকেন্ডহ্যান্ড’ পোশাকের বাজার এর সুযোগ নিতে পারে। ThredUp-এর মতো অনলাইন খুচরা বিক্রেতারা এই পরিবর্তনের ফলে লাভবান হওয়ার আশা করছে।
তারা মনে করে, দ্রুত ফ্যাশনের (fast fashion) দাম বাড়লে ভোক্তারা টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব পোশাকের দিকে ঝুঁকবে।
কিন্তু এই পরিবর্তন বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য কেমন প্রভাব ফেলবে?
একের দিকে, চীনের পোশাকের দাম বাড়লে, কিছু ব্র্যান্ড হয়তো বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি করতে উৎসাহিত হতে পারে।
তবে, অনেক বড় ব্র্যান্ড এরই মধ্যে তাদের উৎপাদন ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশের মতো দেশে সরিয়ে নিয়েছে। যদি এই প্রবণতা বাড়ে, তবে বাংলাদেশের জন্য তা উদ্বেগের কারণ হতে পারে, কারণ এতে আমাদের রপ্তানি কমে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কনীতি পরিবর্তনের ফলে ভোক্তাদের ওপরও প্রভাব পড়বে। সাধারণত, কম দামে পোশাক কেনার প্রবণতা দেখা যায়।
শুল্ক বাড়লে, হয়তো ভোক্তাদের পোশাকের জন্য বেশি খরচ করতে হবে অথবা পুরোনো পোশাকের দিকে ঝুঁকতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিবর্তনের সম্পূর্ণ প্রভাব বুঝতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। তবে, বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুতকারকদের এখন থেকেই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
বিশ্ব বাজারে টিকে থাকতে হলে, আমাদের উৎপাদন খরচ কমানো, উন্নত মানের পোশাক তৈরি করা এবং নতুন বাজার খোঁজার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ উভয়ই তৈরি হতে পারে।
তাই, পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের ব্যবসায়ীদের নতুন কৌশল তৈরি করতে হবে এবং সরকারের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন