ইউক্রেন বিষয়ক এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভার্চুয়ালি অংশ নিচ্ছেন। শুক্রবার ব্রাসেলসে ইউক্রেন বিষয়ক মিত্র দেশগুলোর এক বৈঠকে এই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে, এই বৈঠকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সরাসরি উপস্থিত না থাকায় অনেকেই তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর থেকে ইউক্রেন বিষয়ক মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক হয়ে আসছে। মূলত ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি এই বৈঠকে আলোচনা করা হয়। সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের উদ্যোগে গঠিত এই ‘ইউক্রেন প্রতিরক্ষা বিষয়ক যোগাযোগ গোষ্ঠী’র (Ukraine Defense Contact Group) এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই বৈঠকে সশরীরে উপস্থিত থাকলেন না।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন রাশিয়াকে আরও বেশি সমর্থন জানাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিতে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি স্টিভ উইটকফ রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার জন্য সেন্ট পিটার্সবার্গে গিয়েছেন। ক্রেমলিন জানিয়েছে, উইটকফ শুক্রবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে পারেন।
বৈঠকে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি এবং জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে জার্মানি ২০২৯ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনকে ১১ বিলিয়ন ইউরোর বেশি সামরিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আইআরআইএস-টি মোবাইল বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র। এছাড়া, যুক্তরাজ্য ও নরওয়ে যৌথভাবে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা হিসেবে প্রায় ৫৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে, যা সামরিক সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ এবং কয়েক লক্ষ ড্রোন তৈরিতে ব্যবহৃত হবে।
বৈঠকের আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, তাঁদের আকাশ সুরক্ষার জন্য বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আরও বেশি প্রয়োজন। তিনি মিত্র দেশগুলোকে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়ার সেনারা নতুন করে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইউক্রেনের সামরিক প্রধান ওলেksandr সিরস্কি জানান, রাশিয়া সুমি এবং খারকিভ অঞ্চলে আক্রমণ শুরু করেছে।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্চ মাসে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। আগের মাসের তুলনায় মার্চে হতাহতের সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক পর্যবেক্ষণ মিশন জানিয়েছে, মার্চ মাসে অন্তত ১৬৪ জন নিহত এবং ৯১০ জন আহত হয়েছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন