যুক্তরাজ্যে খেলাধুলা খাতে অর্থায়নে কাটছাঁটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশটির সরকার খেলাধুলা বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থায় বরাদ্দ কমানোর কথা ভাবছে, যা তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলার উন্নয়নে প্রভাব ফেলতে পারে।
সম্প্রতি, স্পোর্ট ইংল্যান্ডের আয়োজনে খেলাধুলার প্রধান সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের এক বৈঠকে এমন আভাস পাওয়া গেছে। ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভস সরকারের বিভিন্ন খাতে ব্যয় সংকোচনের ঘোষণা দেওয়ার পর এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
স্পোর্ট ইংল্যান্ড একটি সরকারি সংস্থা, যারা তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলা উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। প্রতি বছর তারা খেলাধুলা ও শারীরিক কার্যক্রমের প্রসারে ২৫০ মিলিয়নের বেশি পাউন্ড বিনিয়োগ করে।
এই তহবিলের যোগান আসে জাতীয় লটারি এবং সরকারের কাছ থেকে, যা খেলাধুলার বিভিন্ন সংস্থায় বিতরণ করা হয়। ফুটবল এসোসিয়েশন (এফএ), রাগবি ফুটবল ইউনিয়ন (আরএফইউ) এবং ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)-এর মতো বড় খেলাধুলার সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তাদের ধারণা, আগামী বছরগুলোতে তহবিল সংগ্রহ করা আগের চেয়ে কঠিন হতে পারে। যদিও এখনই অর্থ বরাদ্দ কমানোর কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা আসেনি, তবে সংস্থাগুলোকে আর্থিক চ্যালেঞ্জের বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে স্টেডিয়ামের উন্নয়ন সংক্রান্ত পরিকল্পনা সংস্কার নিয়েও আলোচনা হয়েছে, যা আরএফইউ এবং ইসিবি-এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারা স্টেডিয়ামের আধুনিকীকরণ করতে চাইছে।
এছাড়া, পার্লামেন্টে চলমান পরিকল্পনা ও অবকাঠামো বিল নিয়েও কথা হয়। অর্থমন্ত্রী রিভস সরকারের বিভিন্ন বিভাগে ব্যয়ের কাটছাঁটের ঘোষণা দিয়েছেন এবং জুনে একটি বিস্তারিত পর্যালোচনা করার কথা জানিয়েছেন।
স্পোর্ট ইংল্যান্ড সংস্কৃতি, মিডিয়া ও ক্রীড়া বিষয়ক দপ্তর থেকে তহবিল পায়। এই দপ্তর আবার যুক্তরাজ্যের এলিট ক্রীড়া ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ইউকে স্পোর্টকেও অর্থ দেয়, যারা গ্রেট ব্রিটেন অলিম্পিক দলের মতো বিষয়গুলো দেখাশোনা করে।
স্পোর্ট ইংল্যান্ডের অংশীদার সংস্থাগুলোর জন্য বরাদ্দ ২০২৭ সাল পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে। ফলে, সরকারের পক্ষ থেকে অর্থায়নে কোনো কাটছাঁট করা হলে, তার প্রভাব পরবর্তী বছরগুলোতে অনুভূত হবে।
স্পোর্ট ইংল্যান্ডের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “বর্তমানে তহবিল কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে, সরকারি অর্থায়নে যে চাপ রয়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। আসন্ন ব্যয় পর্যালোচনায় বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
খেলাধুলা ও শারীরিক কার্যক্রমে জড়িত সকলের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মানুষের জীবনে এর ইতিবাচক প্রভাবগুলো তুলে ধরা।” ইউকে স্পোর্টও তাদের তহবিল কমানোর শিকার হতে পারে।
এর ফলে ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের জন্য টিম গ্রেট ব্রিটেনকে দেওয়া অর্থের পরিমাণ কমতে পারে এবং আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রেও বাধা সৃষ্টি হতে পারে।
আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, বার্মিংহামে ২০২৬ সালের ইউরোপিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ এবং গ্লাসগোতে কমনওয়েলথ গেমস ও ২০২৮ সালের পুরুষদের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের মতো ইভেন্টগুলোর আয়োজন এখনো সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে।
তবে, একটি প্রস্তাবিত ২০২৯ সালের বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের বিষয়টি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও ইউকে অ্যাথলেটিক্স এবং ইউকে স্পোর্ট এই ইভেন্টটি আয়োজন করতে আগ্রহী, তবে এখনো তারা সরকারের সমর্থন পায়নি।
তথ্য সূত্র: The Guardian