বর কনে সাজা, বিয়ের অনুষ্ঠান আর ইউটিউব-এর দৌলতে বন্ধুত্বের টানাপোড়েন! সম্প্রতি এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে সামাজিক মাধ্যম।
বিয়ের কয়েকমাস আগে এক তরুণী জানতে পারেন, তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী, যিনি একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার, বিয়ের অনুষ্ঠানে একটি ‘নকল প্রস্তাব’-এর আয়োজন করতে চান।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ওই ইউটিউবার তরুণী তাঁর বন্ধুকে জানান যে, বিয়ের পরেই তিনি এমন একটি দৃশ্য তৈরি করতে চান, যেখানে তাঁর ‘প্রেমিক’ তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেবেন।
তাঁর মতে, এই ধরনের ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ মুহূর্তগুলি ক্যামেরাবন্দী করে ইউটিউবে দিলে তা দ্রুত জনপ্রিয় হবে এবং প্রচুর দর্শকও পাওয়া যাবে।
জানা গেছে, এই পরিকল্পনার কথা নাকি তিনি বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই সাজিয়েছিলেন এবং তাঁর ‘প্রস্তাবিত প্রেমিক’-এর সঙ্গেও কথা বলেছিলেন।
কিন্তু কনের এতে ঘোর আপত্তি।
তিনি জানান, তাঁর জীবনের এই বিশেষ দিনটিকে তিনি কোনওভাবেই ইউটিউবের কনটেন্ট বানানোর কাজে ব্যবহার করতে দিতে রাজি নন।
তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন যে, বিয়ের মতো একটি পবিত্র অনুষ্ঠানে এমন ‘নাটক’-এর কোনও জায়গা নেই।
এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বাধে তুমুল বিতর্ক।
ইউটিউবার বান্ধবীটি তখন কনেকে ‘স্বার্থপর’ এবং ‘নিজের কনটেন্ট বানানোর পথে বাধা’ দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ করেন।
এমনকী, তাঁর অনুসারীরা যে এই সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ হবেন, সে কথাও তিনি জানান।
বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি।
বিয়ের কনে তাঁর এই দ্বিধা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা শুরু করেন।
সেখানে অনেকেই কনের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন।
তাঁদের মতে, একজন ভালো বন্ধু এমনটা করতেই পারেন না।
বিয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিনে এমন ‘নকল’ প্রস্তাব চরম অশালীনতা।
কেউ কেউ তো এমনকী পরামর্শ দিয়েছেন, ওই ইউটিউবারকে যেন বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণই না জানানো হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের সমাজে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং পারিবারিক ঐতিহ্য ও সম্মানের সঙ্গে জড়িত।
এখানে সবার আগে পরিবারের সম্মান ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
বন্ধুদের উচিত, একে অপরের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থের চেয়ে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে বেশি গুরুত্ব দেওয়া।
সাধারণত, আমাদের সংস্কৃতিতে এ ধরনের আচরণকে ভালো চোখে দেখা হয় না।
তথ্যসূত্র: সামাজিক মাধ্যম অবলম্বনে।