ইকুয়েডরে আগ্নেয়গিরির মতো বাড়ছে সহিংসতা, রবিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
ইকুয়েডরে মাদক ব্যবসার দৌরাত্ম্যে বাড়ছে সহিংসতা। দেশটির আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একদিকে লড়ছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া, যিনি অপরাধ দমনে কঠোর পদক্ষেপের পক্ষে, অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্টের ছত্রছায়ায় থাকা লুসিয়া গঞ্জালেজ, যিনি সামাজিক সুরক্ষা এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলছেন। আগামী রবিবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এক সময়ের শান্ত দ্বীপ হিসেবে পরিচিত ইকুয়েডর, বর্তমানে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ হারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া দেশগুলোর একটি। ইনসাইট ক্রাইমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এখানে হত্যার হার ছিল সবচেয়ে বেশি। যদিও ২০২৪ সালে এই সংখ্যা সামান্য কমেছে, কিন্তু অপরাধী চক্রগুলো সরকারের দমননীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন কৌশল গ্রহণ করায় সহিংসতা এখনো অব্যাহত আছে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া অপরাধ দমনের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন এবং এর জন্য বিদেশি সরকার ও বিভিন্ন কোম্পানির সাহায্য চেয়েছেন। জানা গেছে, তিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য একটি নৌ ঘাঁটি তৈরি করতে চাচ্ছেন, যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, গঞ্জালেজ বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধী।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও ইকুয়েডরের অবস্থা ভালো নয়। দেশটির অর্থনীতি প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। প্রেসিডেন্ট নোবোয়া কৃষকদের জন্য নগদ অর্থ এবং ঋণের বোঝা কমানোর মতো পদক্ষেপ নিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তিনি বামপন্থীদের মতো কৌশল অবলম্বন করছেন।
লুসিয়া গঞ্জালেজ সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরিয়ার নীতি অনুসরণ করে ‘নতুন ইকুয়েডর’ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ক্ষমতায় আসলে তিনি সামাজিক খাতে ব্যয় বাড়াবেন বলে জানিয়েছেন। যদিও কোরিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তারপরও তিনি এখনো বেশ জনপ্রিয়। গঞ্জালেজ অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে তিনিই দেশ চালাবেন।
বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় গঞ্জালেজ সরকারের হস্তক্ষেপের কথা বলেছেন। এছাড়া, অপরাধ দমনে তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পক্ষপাতী। তবে, তিনি সরাসরি অপরাধীদের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতার কথা অস্বীকার করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গঞ্জালেজও হয়তো নোবোয়ার মতোই কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন। কারণ অতীতে কোরিয়াও একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত প্রথম দফা নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। ফল ঘোষণার পর দুই পক্ষই ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছিল। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, ভোটের ব্যবধান সামান্য হলে পরাজিত প্রার্থী ফল নাও মানতে পারেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন