ভয়ঙ্কর অনুভূতি! ট্রাম্পের সময়ে বিদেশ ভ্রমণে কেন ভয় পাচ্ছেন আমেরিকানরা?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে কিছু আমেরিকান নাগরিকের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই উদ্বেগের কারণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে বিশ্বজুড়ে তৈরি হওয়া নেতিবাচক ধারণা।

পর্যটন বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ‘ট্যুরিজম ইকোনমিক্স’-এর তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমন ৫.১ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এতে করে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

শুধু তাই নয়, কানাডার কিছু ট্যুর কোম্পানি ইতোমধ্যে তাদের বুকিংয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশ তাদের ট্রান্সজেন্ডার ও নন-বাইনারি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, যারা ইতোমধ্যেই বিদেশ ভ্রমণে গেছেন বা যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাদের মধ্যে এক ধরনের দ্বিধা কাজ করছে। তারা মনে করছেন, ট্রাম্পের নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে আমেরিকানদের সম্পর্কে নতুন ধারণা জন্ম নিয়েছে, যা তাদের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, বিদেশি নাগরিকরা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে পারে অথবা তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভাবমূর্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভ্রমণকারীদের ধারণা যে অমূলক নয়, তার প্রমাণ পাওয়া যায় বিভিন্ন জরিপে। ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ‘ইউগভ’-এর তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইউরোপের সাতটি প্রধান দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

ডেনমার্কে এই হার সবচেয়ে বেশি, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন ২৯ শতাংশ কমেছে। সুইডেন, জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

পর্যটন বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্রমণকারীদের এই উদ্বেগের কারণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন নীতি, যেমন— বাণিজ্য যুদ্ধ, মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার এবং গ্রিনল্যান্ড ও কানাডাকে যুক্ত করার হুমকি ইত্যাদি। এসব কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমেরিকার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা ভ্রমণকারীদের জন্য এক ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভ্রমণ বিষয়ক পরামর্শদাতারা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে ভ্রমণকারীদের আরও বেশি সচেতন ও সংবেদনশীল হতে হবে। তাদের মতে, কোনো কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে এবং অন্যের উদ্বেগ বোঝার চেষ্টা করতে হবে।

এছাড়াও, পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে তা কোনো বিতর্ক সৃষ্টি না করে।

অন্যদিকে, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে হলে তাদের নতুন কৌশল তৈরি করতে হবে। তারা মনে করেন, ভ্রমণকারীদের উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের সঙ্গে সহানুভূতিপূর্ণ আচরণ করতে হবে।

ভবিষ্যতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *