আয়ারল্যান্ডের খ্যাতি সম্পন্ন লেখিকা এডনা ও’ব্রায়েনের জীবন নিয়ে নির্মিত একটি নতুন প্রামাণ্যচিত্র মুক্তি পেতে যাচ্ছে। “ব্লু রোড: দ্য এডনা ও’ব্রায়েন স্টোরি” নামের এই চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মতো উন্মোচন করা হবে ও’ব্রায়েনের ব্যক্তিগত ডায়েরিগুলো, যা তাঁর জীবনের নানা দিক তুলে ধরবে।
এডনা ও’ব্রায়েন ১৯৩০ সালে আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি ক্লারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কেটেছে রক্ষণশীল এক পরিবেশে। তরুণ বয়সে তিনি ডাবলিনে ফার্মাসিস্ট হওয়ার প্রশিক্ষণ নিতে যান, সেখানেই তাঁর পরিচয় হয় লেখক আর্নেস্ট গ্যাব্লারের সঙ্গে।
তাঁদের বিবাহিত জীবন সুখের ছিল না। ও’ব্রায়েনের লেখালেখি জীবনের শুরুতে তিনি বেশ কয়েকটি বিতর্কের জন্ম দেন। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য কান্ট্রি গার্লস’ প্রকাশিত হওয়ার পর তা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই সময়ে নারীদের লেখালেখি সমাজে ভালোভাবে গ্রহণ করা হতো না।
ডকুমেন্টারিটিতে ও’ব্রায়েনের ডায়েরি থেকে জানা যায়, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন কতটা আলো ঝলমলে ছিল আবার কখনও গভীর হতাশায় নিমজ্জিত ছিল। খ্যাতি, যশ, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক, বিবাহিত জীবনের সংকট, এমনকি আর্থিক টানাপোড়েন—সবকিছুই উঠে এসেছে তাঁর ডায়েরির পাতায়।
এই ডায়েরিগুলোতে তাঁর সাহিত্যচর্চা, ভালোবাসার বিচিত্র অভিজ্ঞতা, এবং সমাজের নানা বিষয়ে গভীর উপলব্ধির চিত্র পাওয়া যায়।
ডকুমেন্টারিতে ও’ব্রায়েনের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। তাঁর বিবাহিত জীবন, আর্নেস্ট গ্যাব্লারের সঙ্গে বিচ্ছেদ, খ্যাতি এবং জনপ্রিয়তা লাভের গল্প, এমনকি মাদক ব্যবহারের মতো বিষয়গুলোও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ও’ব্রায়েনের জীবনে প্রেম ছিল, ছিল বিচ্ছেদ। ১৯৬০-এর দশকে তিনি প্রিন্সেস মার্গারেট, পল ম্যাকার্টনির মতো বিখ্যাত ব্যক্তিদের সঙ্গে পার্টিতে যোগ দিতেন। রিচার্ড বার্টন, রবার্ট মিচাম, এবং মার্লন ব্র্যান্ডোর মতো তারকারা তাঁর অনুরাগী ছিলেন।
তবে এই সময়েই তিনি কঠিন কিছু সম্পর্কের মধ্যে জড়িয়ে পড়েন।
ডকুমেন্টারিতে তাঁর ডায়েরির কিছু অংশ পাঠ করেছেন অভিনেত্রী জেসী বাকলে। এই ডায়েরিগুলোতে লেখকের ভেতরের মানুষটিকে নতুনভাবে আবিষ্কার করা যাবে। বিশেষ করে নারীদের সমাজে নিজেদের অধিকার আদায়ের লড়াই এবং লেখক হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
এডনা ও’ব্রায়েন তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লেখালেখি করেছেন। তিনি ২০২১ সালে ৯৩ বছর বয়সে মারা যান। “ব্লু রোড: দ্য এডনা ও’ব্রায়েন স্টোরি” মুক্তি পেলে তাঁর জীবন এবং সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান