যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ট্রাম্পের দূত!

ইউক্রেন যুদ্ধ: পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্পের দূত, সমাধানের পথে কি কোনো ইঙ্গিত?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বর্তমানে রাশিয়া সফরে রয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হলো ইউক্রেন যুদ্ধ। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ শুক্রবার এই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উইটকফ, ট্রাম্পের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে পুতিনের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দেবেন। পেসকভের ভাষ্যমতে, এই আলোচনা ইউক্রেন সংকট নিরসনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিতভাবে চলবে।

বর্তমানে যুদ্ধ বন্ধের জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে যে আলোচনা চলছে, তা বিভিন্ন শর্তের কারণে কার্যত থমকে আছে। এর মধ্যেই এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এর আগে, মার্চের শেষের দিকে, ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বের প্রতি পুতিনের সমালোচনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যদি রাশিয়া এবং তার মধ্যে ইউক্রেনে রক্তপাত বন্ধের বিষয়ে কোনো চুক্তি না হয়, তবে তিনি রাশিয়ার তেলসহ অন্যান্য পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে পারেন।

গত মাসে, রাশিয়া ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথভাবে প্রস্তাবিত একটি শর্তহীন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। যদিও মার্চ মাসেই রাশিয়া ও ইউক্রেন তাদের জ্বালানি অবকাঠামোর উপর আক্রমণ বন্ধ করতে রাজি হয়েছিল, উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ অব্যাহত রাখার অভিযোগ করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সময়ে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে যে শীতল সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, সেই পরিস্থিতিতে উইটকফের এই সফর দুই দেশের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে।

পুতিনের সঙ্গে আগের এক সাক্ষাতের পর উইটকফ রুশ নেতাকে একজন “মহান নেতা” হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

সম্প্রতি, তুরস্কের অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তারা তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। একই দিনে, রাশিয়া আমেরিকান নাগরিক ক্সেনিয়া কারেলিনাকে মুক্তি দেয়, যার বিনিময়ে তারা সন্দেহভাজন প্রযুক্তি পাচারকারী আর্থার পেট্রোভকে গ্রহণ করে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, বন্দী বিনিময়ের মতো পদক্ষেপ দুই পক্ষের মধ্যে “প্রয়োজনীয় আস্থা” তৈরি করতে সাহায্য করে। বাইডেন প্রশাসনের সময় এই সম্পর্ক বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হতে পারে। তবে, আলোচনা ফলপ্রসূ হবে কিনা, তা সময়ই বলবে। এই যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতেও এর প্রভাব অনুভূত হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *