বন্ধুত্বে বিপদ সংকেত: কেমন বন্ধুদের এড়িয়ে চলবেন?
বর্তমান যুগে বন্ধুত্বের ধারণা বদলে গেছে, বেড়েছে সম্পর্কের জটিলতা। চারপাশে মানুষের আনাগোনা থাকলেও, সঠিক বন্ধু খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই, বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বই, “হাউ টু গিগল: এ গাইড টু টেকিং লাইফ লেস সিরিয়াসলি” তে লেখিকা হান্না বার্নার এবং পেইজ ডি’সোরবো বন্ধুত্বের কিছু “বিপদ সংকেত”-এর কথা উল্লেখ করেছেন। আসুন, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক, যা আমাদের বাংলাদেশি সমাজের প্রেক্ষাপটে খুবই প্রাসঙ্গিক।
বন্ধুত্ব আসলে এক ধরনের সম্পর্ক, যেখানে একে অপরের প্রতি সমর্থন, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ থাকে। তবে, সব বন্ধুত্বের ধরন এক রকম হয় না।
কারো সাথে হয়তো প্রায়ই দেখা হয়, কারো সাথে হয়তো গভীর সম্পর্ক থাকে, আবার কারো সাথে সম্পর্কটা কেবল সামাজিকতার খাতিরে। বর্তমান সময়ে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা আরও বিস্তৃত হয়েছে।
বন্ধুত্বের নামে এমন কিছু সম্পর্ক তৈরি হয়, যা আমাদের মানসিক শান্তির পরিবর্তে উদ্বেগের কারণ হয়। আসলে, বন্ধু নির্বাচনে আমাদের কিছু বিষয় সবসময় মনে রাখতে হবে।
সবার আগে, বন্ধু নির্বাচনে গুণগত মানকে গুরুত্ব দিতে হবে, সংখ্যার দিকে নয়। এমন বন্ধু তৈরি করুন, যাদের সাথে আপনি মন খুলে কথা বলতে পারেন, বিপদে পাশে পান।
বন্ধুদের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়া থাকা জরুরি।
বার্নার এবং ডি’সোরবো তাদের বইয়ে কিছু বিশেষ ধরনের বন্ধুর কথা উল্লেখ করেছেন, যাদের থেকে দূরে থাকা ভালো। যেমন, যারা সবসময় নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আপনার কথা শোনার চেয়ে নিজেদের কথাই বেশি বলে, তারা আপনার ভালো বন্ধু নাও হতে পারে।
এছাড়াও, যারা সবসময় আপনার দুর্বল মুহূর্তে সহানুভূতি দেখায়, কিন্তু ভালো সময়ে এড়িয়ে চলে, তাদের থেকে সাবধান থাকা উচিত। কারণ, এরা হয়তো আপনার খারাপ সময়ে আনন্দ পায়।
এমন বন্ধুও আছেন, যারা আপনাকে সবসময় হাসিখুশি দেখতে চায়, কিন্তু আপনার কোনো ভালো কাজ দেখলে ঈর্ষা করে। তারা হয়তো আপনার সাফল্যে খুশি হয় না, বরং আপনার সমালোচনা করতে ব্যস্ত থাকে।
এই ধরনের বন্ধুদের থেকে দূরে থাকাই ভালো, কারণ তারা আপনার আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে। এছাড়াও, পার্টি করার বন্ধু এবং যারা সবসময় শুধু মজা করতে চায়, তাদের থেকে সম্পর্কের গভীরতা কম থাকে।
এমন বন্ধুদের থেকে প্রয়োজনে দূরে থাকুন, কারণ তারা হয়তো আপনার ব্যক্তিগত মূল্যের সাথে মেলে না। বন্ধুত্বে স্বচ্ছতা ও পারস্পরিক সম্মান খুবই জরুরি।
তাই, বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক থাকুন। বন্ধুদের সঙ্গে এমন সম্পর্ক তৈরি করুন, যা আপনাকে সুখী করে এবং আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
তথ্যসূত্র: “হাউ টু গিগল: এ গাইড টু টেকিং লাইফ লেস সিরিয়াসলি”, হান্না বার্নার ও পেইজ ডি’সোরবো।