এডিএইচডি’র সমস্যায় সঙ্গীত শিক্ষার সুফল: নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য!

ছোট্ট শিশুদের মনোযোগের অভাব বা অতি সক্রিয়তা (Attention Deficit Hyperactivity Disorder – এডিএইচডি) একটি পরিচিত সমস্যা। পড়াশোনা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় এর প্রভাব পড়ে।

অনেক অভিভাবকই চান, কিভাবে তাদের সন্তানের এই সমস্যাগুলো কিছুটা হলেও কমানো যায়। চিকিৎসকদের পরামর্শের পাশাপাশি, একটি সহায়ক উপায় হতে পারে সঙ্গীতের চর্চা।

সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীতচর্চা এডিএইচডি আক্রান্ত শিশুদের জন্য উপকারী হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঙ্গীতের সঙ্গে জড়িত থাকলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে। এটি মনোযোগ, স্মৃতিশক্তি এবং শ্রবণ প্রক্রিয়াকরণে সাহায্য করে।

যারা নিয়মিত গান করে বা বাদ্যযন্ত্র বাজায়, তাদের মধ্যে আবেগ প্রকাশের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং সামাজিক দক্ষতাও উন্নত হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত সঙ্গীতচর্চা করে, তাদের মস্তিষ্কের দুটি অংশের মধ্যে সমন্বয় বাড়ে। এর ফলে মনোযোগের ক্ষমতা বাড়ে।

সঙ্গীতের গঠনমূলক উপাদানগুলো, যেমন তাল, লয়, সুর ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত থাকলে মস্তিষ্কের সংযোগ তৈরি হয়, যা মনোযোগের উন্নতিতে সহায়ক।

২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীতচর্চা স্মৃতিশক্তি, বিশেষ করে কার্যকরী স্মৃতি (working memory)-কে উন্নত করতে পারে। কার্যকরী স্মৃতি হলো, কোনো কাজ করার সময় যা আমরা অল্প সময়ের জন্য মনে রাখি।

এডিএইচডি আক্রান্ত অনেক শিশুর শ্রবণ প্রক্রিয়াতেও সমস্যা থাকে। তারা শব্দ বুঝতে এবং সেগুলোর অর্থ উপলব্ধি করতে অসুবিধা বোধ করে।

২০২১ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীতচর্চা শ্রবণ প্রক্রিয়াকরণের উন্নতিতে সাহায্য করে। এর ফলে শিশুদের ভাষা বিকাশেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

সঙ্গীতচর্চা দলবদ্ধভাবে করার সুযোগ তৈরি করে। এর মাধ্যমে এডিএইচডি আক্রান্ত শিশুরা অন্যদের সঙ্গে মিশতে শেখে এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জন করে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সঙ্গীতে অংশ নেয়, তাদের পারস্পরিক যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ে। যারা সঙ্গীত নিয়ে কাজ করে, তাদের মধ্যে আত্ম-নিয়ন্ত্রণও বাড়ে।

তবে, সবার জন্য সঙ্গীতচর্চা একইভাবে কাজ নাও করতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে বাদ্যযন্ত্র বাজানো বা গান শেখা কঠিন মনে হতে পারে।

মনোযোগের অভাবে নিয়মিত অনুশীলনে সমস্যা হতে পারে। দলবদ্ধভাবে সঙ্গীতচর্চার সময় অন্যদের সঙ্গে তাল মেলাতেও অসুবিধা হতে পারে।

তাই, কোনো বাদ্যযন্ত্র শেখা বা গান করার আগে, নিজের বা সন্তানের আগ্রহ ও ক্ষমতার কথা বিবেচনা করা জরুরি।

যদি সঙ্গীতচর্চা ভালো না লাগে, তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, অন্যান্য অনেক ধরণের কার্যক্রম রয়েছে যা এডিএইচডি-র সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

তথ্য সূত্র: হেলথলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *