চীনের বুকে ভয়ঙ্কর ঝড়: উড়তে থাকা বিমানের বিভীষিকা!

চীনের রাজধানী বেইজিং এবং দেশটির উত্তরাঞ্চলে গত কয়েক দশকে এপ্রিল মাসের সবচেয়ে শক্তিশালী বাতাস বয়ে গেছে। মঙ্গোলিয়া থেকে আসা একটি শীতল বায়ুপ্রবাহের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যার ফলস্বরূপ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

শনিবার বেইজিংয়ে বাতাসের বেগ এতটাই বেশি ছিল যে, কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয় এবং এর জেরে শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, বেইজিং কর্তৃপক্ষ এই দশকের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা হিসেবে ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করেছে।

বিমানবন্দর এবং রেলস্টেশনগুলোতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৪১৩টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। বিমানবন্দরের এক্সপ্রেস সাবওয়ে লাইনসহ কিছু দ্রুতগতির ট্রেনের চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় স্থানগুলি, যেমন – সামার প্যালেস, টেম্পল অফ হেভেন, বেইজিং চিড়িয়াখানা এবং ইউনিভার্সাল স্টুডিও থিম পার্ক সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

শক্তিশালী বাতাসের কারণে রাজধানীর প্রায় ৩০০টি গাছ উপড়ে গেছে এবং ১৯টি গাড়ির ক্ষতি হয়েছে। তবে, বেইজিংয়ে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চরম আবহাওয়ার ঘটনা বাড়ছে এবং চীনও এর ব্যতিক্রম নয়। গত বছর দেশটিতে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে।

মে মাসে, ভারী বৃষ্টির কারণে চীনের দক্ষিণাঞ্চলে একটি মহাসড়ক ভেঙে পড়ে, এতে ৪৮ জন নিহত হয়।

এই ঘটনাগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের প্রমাণ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, যার ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো আরও ঘন ঘন ঘটছে।

বাংলাদেশের মতো একটি জলবায়ু-সংবেদনশীল দেশে, চীনের এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতের জন্য একটি সতর্কবার্তা। আমাদেরও প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করা যায়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *