প্রকাশ: বিবিসির বিচারে ব্রিটেনের সবচেয়ে ‘ঘৃণিত’ কণ্ঠস্বর, জানালেন কেট অ্যাডি!

শিরোনাম: বিবিসির অভ্যন্তরীণ জরিপে ‘সবচেয়ে অপছন্দনীয়’ ভাষার স্বীকৃতি, জানালেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক কেট অ্যাডি।

যুক্তরাজ্যের বিবিসি’র অভ্যন্তরীন একটি জরিপে বার্মিংহামের ভাষাকে (Birmingham accent) সবথেকে অপছন্দনীয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিবিসির খ্যাতনামা যুদ্ধ বিষয়ক সংবাদদাতা কেট অ্যাডি সম্প্রতি তার জীবনের স্মৃতি বিজড়িত তথ্যাদি সংরক্ষণের এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান।

কেট অ্যাডি’র কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে তৈরি করা একটি বিশাল সংগ্রহশালার কাজ বর্তমানে সান্দারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে। এই অনুষ্ঠানে তিনি জানান, বিবিসি’র অভ্যন্তরে বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষার ওপর একটি তালিকা ছিল, যেখানে পছন্দের এবং অপছন্দের ভাষাগুলোর স্থান নির্ধারণ করা হতো। সেই তালিকায় বার্মিংহামের ভাষা ছিল সবার নিচে।

অনুষ্ঠানে অ্যাডি জানান, নিউক্যাসেলের ভাষাকে (Geordie accent) বেশ পছন্দ করা হতো। অ্যাডি নিজেই সান্দারল্যান্ডে বড় হয়েছেন, তবে তার নিজের আঞ্চলিক ভাষার তেমন কোনো প্রভাব নেই। তিনি বলেন, “ভাষা একটি জটিল বিষয়। একেক অঞ্চলের মানুষের ভাষার ধরন একেক রকম, এবং সেই ভাষা শোনার প্রতিক্রিয়াও ভিন্ন হয়।”

অ্যাডি জানান, বিবিসি’র এই অভ্যন্তরীণ তালিকায় সবচেয়ে অপছন্দনীয় ভাষা কোনটি, তা জানতে তিনি উপস্থিত শ্রোতাদের কাছে জানতে চান। উপস্থিত সবাই একবাক্যে বার্মিংহামের ভাষার কথা বলেন। অ্যাডি তখন তাদের উত্তর সঠিক বলে জানান।

বার্মিংহামের ভাষার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “পুরো দেশ জুড়েই এই ভাষার প্রতি মানুষের একটা বিরূপ ধারণা রয়েছে। একবার জনপ্রিয় সংবাদ উপস্থাপক মাইকেল বুয়ার্ককে (Michael Buerk) তার আঞ্চলিক ভাষায় সংবাদ পাঠ না করার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কোনো মৃত্যু পরোয়ানা পেতে চাই না’।”

সংবাদ পরিবেশনে ভাষার ব্যবহার নিয়েও অনেক আলোচনা হতে পারে, এমনটা উল্লেখ করে অ্যাডি বিবিসি রেডিও ডারহামে কাজ করার সময়ের একটি ঘটনার কথা বলেন। সেখানকার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা একজন প্রযোজক যখন বুলেটিন পড়তেন, তখন শ্রোতাদের কাছ থেকে নানা ধরনের অভিযোগ আসত। তাদের মতে, খবর পরিবেশনের জন্য এই ভাষা যথাযথ ছিল না।

কেট অ্যাডি’র সাংবাদিকতা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা ছিল ১৯৮০ সালের মে মাসে, ইরানের দূতাবাসে ঘেরাওয়ের সময়কার সংবাদ পরিবেশন। সেই সময়ে তার সাহসী পদক্ষেপ ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল।

কেট অ্যাডির সংগ্রহশালায় তার ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে অসংখ্য নোটবুক, টেপ, চিঠি, ছবি এবং ভিডিও ক্লিপ। এছাড়াও, তিয়ানআনমেন স্কয়ারে (Tiananmen Square) রিপোর্টিং করার সময় তার গায়ে লাগা একটি বুলেটও রয়েছে।

সংগ্রহশালাটিতে অ্যাডির শৈশব এবং কৈশোরের অনেক স্মৃতিচিহ্নও রয়েছে। যেখানে খেলাধুলা এবং নাটকের প্রতি তার আগ্রহের প্রমাণ পাওয়া যায়।

বর্তমানে সংবাদ পরিবেশনের মান নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়ে অ্যাডি বলেন, তিনি চান যুক্তরাজ্যের প্রতিটি শহরে একটি করে ছোট রেডিও স্টেশন থাকুক, যেখানে স্থানীয় খবর পরিবেশন করা হবে। তার মতে, “লন্ডন বাদে এই দেশের অন্যান্য অঞ্চলের খবর সেভাবে পরিবেশিত হয় না। অনেক জায়গাই যেন উপেক্ষিত হয়। আমি নিউজিল্যান্ডে দেখেছি, স্থানীয় একটি পত্রিকার অফিস, টিভি এবং রেডিও একই ভবনে অবস্থিত। তারা একসাথে কাজ করে এবং এটা খুবই কার্যকর, যা বেশ সাশ্রয়ীও।”

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *