প্রিন্স হ্যারির নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাজ্যের আইনি লড়াই, ক্লান্ত তিনি।
যুক্তরাজ্যে নিজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল রাখার জন্য আইনি লড়াইয়ে ‘ক্লান্ত’ হয়ে পড়েছেন প্রিন্স হ্যারি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই কথা জানান।
ডেইলি টেলিগ্রাফের খবর অনুযায়ী, হ্যারির ধারণা, তাকে ‘ব্রিটিশ জীবনযাত্রায়’ ফিরে আসতে বাধ্য করতেই তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হয়েছে।
প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই মামলায় তিনি হোম অফিসের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। হ্যারি জানান, আইনি লড়াইয়ে তিনি ‘বিপর্যস্ত’ হয়ে পড়েছেন।
লন্ডনের একটি আপিল আদালতে শুনানির পর তিনি বলেন, পুলিশি নিরাপত্তা তুলে নেওয়াটা তার জন্য ‘সহজ ছিল না’। সংবাদমাধ্যমকে তিনি আরও জানান, তার করা মামলাগুলোর মধ্যে, বিশেষ করে সংবাদপত্রের সঙ্গে হওয়া মামলাগুলোর চেয়েও এই মামলাটি তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রিন্স হ্যারির আইনজীবীর মতে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে তার জীবন ‘বিপদগ্রস্ত’। শোনা যাচ্ছে, হ্যারি তার সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাজ্যে নিরাপদ বোধ করেন না।
এই সপ্তাহের আপিল শুনানি এবং আগের শুনানিতে অত্যন্ত গোপনীয় তথ্যের কারণে অনেক কিছুই গোপন রাখা হয়েছিল।
হ্যারি জানান, এই মামলার আইনি বিষয়গুলো থেকে তিনি হতাশ হয়েছেন।
প্রিন্স হ্যারিকে শুনানিতে সাক্ষ্য দিতে হয়নি।
তবে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এসে আদালতের শুনানিতে যোগ দিয়েছিলেন, যা তার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।
ফেব্রুয়ারি ২০২৪-এ বিচারক লেনের রায়ে হ্যারি হোম অফিসের বিরুদ্ধে মামলায় হেরে যান। বিচারক রায় দেন, সরকারের নিরাপত্তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি অন্যায় ছিল না।
হ্যারি মনে করেন, তার এবং মেগানের নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল তাদের যুক্তরাজ্যে ফিরে আসতে বাধ্য করা।
এর মাধ্যমে, বহিরাগত হিসেবে যুক্তরাজ্যে তাদের আসা আরও কঠিন এবং সম্ভবত অনিরাপদ করে তোলা হয়েছে।
প্রিন্স হ্যারির ধারণা, রাজা তৃতীয় চার্লসও তার নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করতে হস্তক্ষেপ করতে পারতেন।
কারণ রাজার ব্যক্তিগত সচিব স্যার ক্লাইভ অ্যালডারটন রয়েল ও ভিআইপি এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য।
তবে বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে, তাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই।
জানা গেছে, হ্যারি এবং মেগান রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার পাঁচ বছর আগে নিরাপত্তা বিষয়ক এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখন অ্যালডারটন ওই কমিটিতে ছিলেন না।
প্যালেসের একজন সূত্র মারফত জানা যায়, ‘এগুলো নিরাপত্তা ও সরকারি নীতির বিষয়, এবং সাধারণত, এ বিষয়ে মন্তব্য করা বা হস্তক্ষেপ করা উপযুক্ত নয়।’
অভিযোগ রয়েছে, হ্যারি এখনো তার বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেননি।
গত ফেব্রুয়ারিতে রাজা তৃতীয় চার্লসের ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর হ্যারির সঙ্গে রাজার দেখা হয়েছিল, কিন্তু তারপর থেকে তাদের আর দেখা হয়নি।
ইস্টারের পর তিনজন বিচারকের একটি প্যানেল তার আপিলের রায় দেবেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান