অর্থনৈতিক সংকটে ট্রাম্পের গলফ ও ভোজ: ক্ষোভ উগরে দিলেন সমালোচকেরা

ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির জেরে বিশ্বজুড়ে আর্থিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়ার পর, সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। অর্থনীতির কঠিন সময়েও ট্রাম্পের জীবনযাত্রায় বিলাসিতা এবং সাধারণ মানুষের থেকে তাঁর বিচ্ছিন্নতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এমনকি অনেকে তাঁকে ইতিহাসের বিতর্কিত শাসকদের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

গত কয়েক সপ্তাহে, ট্রাম্প প্রথমে বিদেশি পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেন, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন আনে। এর ফলস্বরূপ, বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়।

এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পকে দেখা যায় ফ্লোরিডার একটি গলফ কোর্সে, যেখানে তিনি খেলা উপভোগ করছিলেন। এরপর হোয়াইট হাউসে রেসিং কার চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে ডিনার করেন তিনি।

এই সময়ে, যখন আমেরিকার অর্থনীতি টালমাটাল অবস্থায় ছিল, ট্রাম্প প্রায়শই এমন সব মন্তব্য করেছেন যা অনেকের কাছেই ছিল অবিবেচনাপ্রসূত। যেমন, তিনি বলেছিলেন, “এই মুহূর্তে ধনী হওয়ার দারুণ সুযোগ।”

এই ঘটনার পরে অনেকে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রোমান সম্রাট নিরো বা ক্ষমতা এবং বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন শাসকদের তুলনা করেছেন। ডেমোক্রেটিক কৌশলবিদ কার্ট বার্ডেলার মতে, “অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে যখন তিনি গাউন পরে একটি বলরুমে ভাষণ দেন, অথবা একাধিকবার গলফ খেলতে যান, তখন তিনি হয় একেবারে অনুভূতিহীন, না হয় সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টের প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীন একজন মানুষ।”

শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের আগে, ট্রাম্প তাঁর উপদেষ্টাদের সঙ্গে চূড়ান্ত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, তিনি নাকি এই বিষয়ে এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, কারও কথা শোনেননি।

পরবর্তীতে, বাজারে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পর, ট্রাম্প কিছুটা নরম হন। তিনি চীন সহ বেশ কয়েকটি দেশের উপর শুল্ক আরোপের বিষয়টি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন, আলোচনার সুযোগ তৈরি করার জন্য।

ট্রাম্পের এই ধরনের আচরণ আগে বহুবার দেখা গেছে। সমালোচকরা মনে করেন, তিনি তাঁর অনুগতদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ আনুগত্য আশা করেন এবং সমালোচকদের প্রতি প্রতিশোধ পরায়ণ হন। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পলিটিক্সের পরিচালক ল্যারি সাবাতো বলেছেন, “ট্রাম্প যেন সাধারণ মানুষকে কেক খেতে বলার মতো।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক মহলে তাঁর ভাবমূর্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, এই ধরনের নীতি আমেরিকার অর্থনীতিকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *