ভার্জিনিয়ার একটি শান্ত শহর, ম্যারিয়ন, যা অ্যাপালেশিয়ান ট্রেইলের কাছাকাছি অবস্থিত। যারা পাহাড় ভালোবাসেন, তাদের কাছে এই জায়গাটি খুবই পরিচিত।
তবে যারা হাইকিং করেন না, তাদের জন্যও ম্যারিয়ন আকর্ষণীয় একটি গন্তব্য হতে পারে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই শহরটিতে উপভোগ করার মতো অনেক কিছুই রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের একটি রাজ্য হলো ভার্জিনিয়া। আর এই রাজ্যের একটি সুন্দর শহর হলো ম্যারিয়ন।
অ্যাপালেশিয়ান ট্রেইল হলো ২,০০০ মাইলের বেশি দীর্ঘ একটি হাইকিং পথ, যা জর্জিয়া থেকে মেইন পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রতি বছর প্রায় ৩,০০০ মানুষ এই পথ পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এই পথের কাছাকাছি হওয়ায় ম্যারিয়ন শহরে হাইকারদের আনাগোনা লেগেই থাকে। এখানে তারা বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পান।
ম্যারিয়ন, অ্যাপালেশিয়ান ট্রেইল কনজার্ভেন্সির অন্তর্ভুক্ত একটি শহর। এখানে হাইকারদের জন্য শহরের ভেতরে যাওয়ার শাটল, বিনামূল্যে সিনেমা দেখার ব্যবস্থা এবং স্থানীয় পিৎজা ডেলিভারির মতো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
“আমেরিকার সবচেয়ে সুন্দর শহর” হিসেবে পরিচিত ম্যারিয়ন, মাউন্টেন ডিউ সোডার আদি উৎপত্তিস্থল হিসেবেও বিখ্যাত। এছাড়া, এখানে বিভিন্ন স্বাদের ফাজও পাওয়া যায়।
আপনি যদি ম্যারিয়নে ভ্রমণ করতে চান, তাহলে জানুয়ারিতে সল্টভিলে অনুষ্ঠিত “উল্লি ম্যামথ ডে” অথবা ত্রৈমাসিকভাবে আয়োজিত “মাউন্ট রজার্স ন্যাচারালিস্ট র্যালি”-র মতো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন।
এখানকার ব্লু রিজ ডিসকভারি সেন্টারে বক্তারা এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য নিয়ে আলোচনা করেন।
হাইকিং ভালোবাসেন না এমন মানুষেরাও এই শহরের আকর্ষণীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। ম্যারিয়নের কাছাকাছি রয়েছে মাউন্ট রজার্স এবং গ্রেসন হাইল্যান্ডস স্টেট পার্ক।
গ্রেসন হাইল্যান্ডস স্টেট পার্কে ঘুরে বেড়ানো ছোট ছোট ঘোড়াগুলো পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়।
যারা গাড়ী অথবা মোটরসাইকেল ভালোবাসেন, তাদের জন্য “ব্যাক অফ দ্য ড্রাগন” -এর মতো আকর্ষণ তো রয়েছেই।
প্রায় ৩০ মাইলের এই পথে ৩০০টির বেশি বাঁক রয়েছে, যা রাইডারদের জন্য দারুণ একটি অভিজ্ঞতা।
এখানে আসা পর্যটকদের জন্য ওয়েন সি. হেন্ডারসন স্কুল অফ অ্যাপালাচিয়ান আর্টস-এ যাওয়াটা আবশ্যক।
এখানে আপনি নিজের বাদ্যযন্ত্র তৈরি করতে পারেন। এছাড়াও, স্থানীয় শিল্পীদের সাথে গানের আসর উপভোগ করা এবং গ্যালারিতে শিল্পকর্ম দেখার সুযোগ রয়েছে।
ম্যারিয়নের কাছেই রয়েছে সল্টভিল শহর। এখানে “মিউজিয়াম অফ দ্য মিডল অ্যাপালাচিয়ানস” -এ স্থানীয় এলাকার নানান ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা যায়।
এখানকার প্রদর্শনীতে উলের ম্যামথের জীবাশ্ম এবং লবণ খনি শিল্পের ইতিহাস তুলে ধরা হয়।
ম্যারিয়নের রেস্টুরেন্টগুলোর মধ্যে “ডিপ ডগ” অন্যতম, যা ১৯৫৭ সাল থেকে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়।
এখানে ব্যাটারে ডুবানো হটডগ পাওয়া যায়। এছাড়া, “সিস্টার্স ক্যাফে অ্যান্ড গিফটস”-এ সকালের কফি থেকে রাতের খাবার—সব কিছুই উপভোগ করা যায়।
আপনি চাইলে এখানকার স্থানীয় জিনিসপত্রও কিনতে পারেন। “সুর ৮১”-তে আমেরিকান ও মেক্সিকান খাবারের স্বাদ নেওয়া যেতে পারে।
রাতে “হাইল্যান্ডস ডিস্টিলিং কোম্পানি”-তে এখানকার ঐতিহ্যবাহী মুনশাইন ও বোরবন-স্টাইলের হুইস্কি দিয়ে দিনটি শেষ করতে পারেন।
যদি কেনাকাটা করতে চান, তাহলে ম্যারিয়ন আউটডোরস-এ যেতে পারেন, যেখানে হাইকিংয়ের সরঞ্জাম পাওয়া যায়। এছাড়া, ডাউনটাউন রিসেল বুটিক-এ পুরনো কাপড় ও অ্যাক্সেসরিজ এবং “দ্য ফোর্ড স্টুডিওজ”-এ বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম দেখা যেতে পারে।
যদি থাকার জন্য ভালো কোনো জায়গা খুঁজে নিতে চান, তাহলে ম্যারিয়ন আপনার জন্য আদর্শ জায়গা।
ম্যারিয়ন আউটডোরসের উপরে অবস্থিত “মেরি ইন” -এ হাইকারদের জন্য হোস্টেল রয়েছে। এখানে কাপড় ধোয়ার ব্যবস্থা এবং আরামদায়ক বিছানাও রয়েছে।
এছাড়া, কাছেই রয়েছে “হাংরি মাদার স্টেট পার্ক”।
এখানে ১৯৩০-এর দশকে তৈরি হওয়া কাঠের কেবিনগুলোতে থাকার সুযোগ রয়েছে।
পর্যটকদের থাকার জন্য এখানে “জেনারেল ফ্রান্সিস ম্যারিয়ন হোটেল”-এর মতো ভালো মানের হোটেলও রয়েছে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার