বাজারে আসল সুগন্ধীর নকল সংস্করণ বা ‘ডুপ’ (dupe) সুগন্ধীর চাহিদা বাড়ছে, যা নিয়ে চিন্তিত সুগন্ধী প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। সম্প্রতি, যুক্তরাজ্যের বাজারে এই ধরনের নকল সুগন্ধীর প্রসার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, আসল সুগন্ধীর তুলনায় অনেক কম দামে পাওয়া গেলেও, নকল সুগন্ধীর চাহিদা বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে।
এই পরিস্থিতিতে, আসল সুগন্ধী প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি তাদের অধিকার রক্ষার জন্য আইনগত সুরক্ষার অভাব বোধ করছে।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের বাজারে প্রায় অর্ধেক ক্রেতাই এখন নামী ব্র্যান্ডের সুগন্ধীর নকল সংস্করণ কিনছেন। এই প্রবণতা মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, ৩০০ পাউন্ডের বেশি দামের একটি সুগন্ধীর অনুরূপ ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫ পাউন্ডে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুগন্ধীর ঘ্রাণকে ট্রেডমার্ক হিসেবে নিবন্ধন করা কঠিন। কারণ, ঘ্রাণ একটি ব্যক্তি-নিরপেক্ষ বিষয়।
একজন ব্যক্তির কাছে যা আকর্ষণীয়, অন্যজনের কাছে তা নাও হতে পারে। ফলে, ঘ্রাণকে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা এবং তা ধরে রাখা কঠিন।
বিদ্যমান আইনে, সুগন্ধী প্রস্তুতকারকদের জন্য তাদের পণ্যের ঘ্রাণকে রক্ষা করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আইনজীবীরা মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে সুগন্ধী প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর জন্য তাদের মেধাস্বত্ব রক্ষা করা জরুরি। যদিও বর্তমানে সুগন্ধীর ঘ্রাণকে পেটেন্ট বা ট্রেডমার্ক করা কঠিন, তবুও ব্র্যান্ডের নাম, বোতলের ডিজাইন এবং মোড়কীকরণের মাধ্যমে কিছু সুরক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
তবে, নকল প্রস্তুতকারকরা গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি-মাস স্পেকট্রোমেট্রি (GCMS)-এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসল সুগন্ধীর রাসায়নিক উপাদান বিশ্লেষণ করে, সেই অনুযায়ী নকল সুগন্ধী তৈরি করছে।
ফলে, আসল প্রস্তুতকারকদের জন্য তাদের ঘ্রাণকে রক্ষা করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাজ্যের বাজারে সুগন্ধীর বাজার বর্তমানে প্রায় ১.৭৪ বিলিয়ন পাউন্ডের এবং ২০২৯ সালের মধ্যে তা ২ বিলিয়ন পাউন্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, নকল সুগন্ধীর এই ক্রমবর্ধমান চাহিদা, আসল ব্র্যান্ডগুলোর জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সস্তা বিকল্পের প্রতি আগ্রহ বেশি। তারা মনে করেন, ভালো ব্র্যান্ডের সুগন্ধীর ঘ্রাণ পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ, আসল না নকল, সেটি তাঁদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নকল সুগন্ধীর প্রচার বাড়ছে, যা এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশেও সুগন্ধীর বাজার বাড়ছে এবং এখানেও নকল পণ্যের একটি বাজার তৈরি হয়েছে। অনেক সময়, নামী ব্র্যান্ডের মোড়কে বিক্রি হওয়া নকল পণ্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে।
যদিও সুগন্ধীর ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব রক্ষার বিষয়টি জটিল, তবে সচেতনতা এবং সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্রেতাদের ঠকানো এবং আসল ব্র্যান্ডের ক্ষতি করা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: The Guardian
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			