স্বামী-স্ত্রীর খোলামেলা সম্পর্ক: তারা কি করে?

বৈবাহিক সম্পর্কের চিরাচরিত ধারণার বাইরেও যে সম্পর্কের ধারণা থাকতে পারে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। পশ্চিমা বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের সম্পর্ক চর্চা হয়, যেখানে সঙ্গীর স্বাধীনতাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

এই ধরনের সম্পর্কের একটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো, যেখানে একজন নারী ও পুরুষের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্মতির ভিত্তিতে নিজেদের সম্পর্কের সংজ্ঞা তৈরি করেছেন।

লিস এবং প্যাট্রিক নামের একটি দম্পতি, যারা প্রায় চব্বিশ বছর ধরে একসঙ্গে আছেন। তাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো একে অপরের প্রতি গভীর আস্থা এবং খোলামেলা আলোচনা।

তারা তাদের সম্পর্ককে “মুক্ত” সম্পর্ক হিসেবে বর্ণনা করেন। এর অর্থ হলো, তারা দুজনেই অন্য কারও প্রতি আকৃষ্ট হলে, সেই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, যদি পারস্পরিক বোঝাপড়া থাকে।

তবে, তারা জোর দেন, এটি তাদের প্রধান সম্পর্কের কোনো বিকল্প নয়।

লিস জানান, তাদের মধ্যে এমন ঘটনা খুব বেশি ঘটেনি। তিনি বলেন, “আমরা একে অপরের প্রতি সম্পূর্ণভাবে সৎ থাকি।

যদি কেউ অন্য কারও প্রতি আকৃষ্ট হয়, তাহলে আমরা তা নিয়ে আলোচনা করি।” প্যাট্রিকও একই সুরে কথা বলেন।

তাদের মতে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে কৌতূহল ধরে রাখাটা জরুরি। তারা বিশ্বাস করেন, “চব্বিশ বছর পরেও আমরা আমাদের সঙ্গীর মধ্যে নতুন কিছু খুঁজে পেতে পারি।”

এই দম্পতি তাদের সম্পর্কের উন্নতির জন্য বিভিন্ন ধরনের উপায় খুঁজে বের করেছেন। তারা বিভিন্ন কর্মশালা–য় অংশ নেন, যেখানে সম্পর্কের গভীরতা বাড়ানোর কৌশল শেখানো হয়।

এছাড়াও, তারা একে অপরের সঙ্গে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে আলোচনা করেন, যা তাদের যৌনজীবনকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করে।

লিসের মতে, “আমরা পর্নোগ্রাফি এবং বিভিন্ন গল্প থেকেও অনুপ্রেরণা নিই।”

তবে, এই ধরনের সম্পর্কে কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তারা তাদের সমাজের মধ্যেকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলেন।

লিসের কথায়, “আমাদের সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দু সবসময় আমিই। প্যাট্রিকের অন্য কারও সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হলেও, সেটা আমাদের সম্পর্কের জন্য কোনো হুমকি নয়।”

প্যাট্রিকের মতে, তিনি তার স্ত্রীর কথাগুলো শুনতে ভালোবাসেন। তিনি বলেন, “আমি জানতে চাই, সে কেমন অনুভব করেছে।

আমার স্ত্রীর আগের অভিজ্ঞতা ছিল, তাই প্রথমে আমার মধ্যে ঈর্ষা ছিল। কিন্তু এখন আর কোনো ঈর্ষা নেই।

এই দম্পতির সম্পর্কের মূল চাবিকাঠি হলো পারস্পরিক বোঝাপড়া, আলোচনা এবং একে অপরের প্রতি সম্মান। তারা বিশ্বাস করেন, প্রতিটি মানুষের নিজস্ব চাহিদা রয়েছে, এবং সেই চাহিদাগুলো পূরণ করার স্বাধীনতা থাকা উচিত।

তাদের এই সম্পর্কের ধরন হয়তো অনেকের কাছে অপরিচিত, তবে এটি তাদের পারস্পরিক ভালোবাসার একটি সুন্দর বহিঃপ্রকাশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো সম্পর্কের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন খোলামেলা আলোচনা, পারস্পরিক সম্মান এবং একে অপরের প্রতি গভীর আস্থা। লিস ও প্যাট্রিকের সম্পর্ক আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *