ফ্লোরিডার একটি বিদ্যালয়ে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, কারণ তিনি অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই এক ছাত্রকে তার পছন্দের নামে ডেকেছিলেন। এই ঘটনার জেরে শিক্ষিকার শিক্ষকতার চুক্তি নবায়ন করা হয়নি এবং বিষয়টি বর্তমানে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্যাটেলাইট হাই স্কুলের ওই শিক্ষিকা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। কিন্তু এক শিক্ষার্থীর পছন্দের নামে তাকে ডাকার কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের ভিত্তিতে, ব্র্যাভার্ড পাবলিক স্কুলস (Brevard Public Schools)-এর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ওই শিক্ষক সরাসরি রাজ্যের আইন এবং কর্তৃপক্ষের নিয়ম ভেঙেছেন।
ব্র্যাভার্ড পাবলিক স্কুলসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষক নিজে বিষয়টি স্বীকার করেছেন এবং এর ফলস্বরূপ তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়। এরপর তাকে সতর্ক করে একটি চিঠি দেওয়া হয়।
ফ্লোরিডার আইন অনুযায়ী, কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীর লিঙ্গপরিচয় অনুযায়ী নির্ধারিত নামের পরিবর্তে অন্য কোনো নাম ব্যবহার করতে পারেন না, যদি না অভিভাবকের অনুমতি থাকে। এমনকি, কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের তাদের পছন্দের নাম বা লিঙ্গপরিচয় জানাতেও বলতে পারেন না। রাজ্যের শিক্ষা বিভাগের মুখপাত্র সিডনি বুকার সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানান, “ফ্লোরিডা অভিভাবকদের অধিকারকে সমর্থন করে। সন্তানের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরই প্রধান ভূমিকা থাকে।”
শিক্ষিকার ১০ মাসের চুক্তি ছিল, যা আগামী মাসে শেষ হওয়ার কথা। স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্যের পক্ষ থেকে তার শিক্ষকতার সনদ পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার চুক্তি নবায়ন করা হবে না।
এদিকে, ওই শিক্ষিকার সমর্থনে অনেকে এগিয়ে এসেছেন। Change.org-এ একটি পিটিশনে ২৬,০০০-এর বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন এবং শিক্ষিকাকে “শিক্ষার্থীদের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। পিটিশনে তার প্রাক্তন শিক্ষার্থী, সহকর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও সমর্থন জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরাও এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। স্যাটেলাইট হাই স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কুলের উঠানে শান্তিপূর্ণভাবে কিছুক্ষণ অবস্থান করে।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ক্রিস্টিন স্ট্যানিয়েক, যিনি ওই শিক্ষকের ছাত্রীর অভিভাবক, ব্র্যাভার্ড পাবলিক স্কুলস বোর্ডের এক সভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, “শিক্ষক তার ক্লাসে এবং শিক্ষার্থীদের জীবনে পরিবর্তন এনেছিলেন, আমার মেয়ের জীবনেও। তিনি আরও বেশি কিছু পাওয়ার যোগ্য ছিলেন।”
এই ঘটনার পর, যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক, অভিভাবকদের অধিকার এবং স্কুলের নীতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
তথ্য সূত্র: CNN