শিরোনাম: জন লেনন ও ইয়োকো ওনোর অজানা দিক: নতুন তথ্যচিত্রে উন্মোচন।
বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী জন লেনন এবং ইয়োকো ওনোর জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে নির্মিত হয়েছে নতুন তথ্যচিত্র ‘ওয়ান টু ওয়ান: জন অ্যান্ড ইয়োকো’। এই ছবিতে ১৯৭০-এর দশকে নিউইয়র্কে তাদের কাটানো সময়ের অজানা কিছু দিক তুলে ধরা হয়েছে, যা দর্শকদের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে।
সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া এই তথ্যচিত্রটি শুধু একটি যুগল জীবনের গল্প নয়, বরং সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতা, শিল্পী জীবনের সংকট এবং সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার এক প্রতিচ্ছবি।
এই তথ্যচিত্রে ১৯৭০ এর দশকের শুরুতে জন লেনন ও ইয়োকো ওনোর নিউইয়র্কে আসার প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে। বিটলস ভেঙ্গে যাওয়ার পর, তারা কিভাবে নতুন করে জীবন শুরু করেছিলেন, কিভাবে আমেরিকার সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছিলেন, সেসব বিষয়গুলো এতে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
তাদের গ্রিনউইচ ভিলেজের বাড়িতে আসা শিল্পী, বুদ্ধিজীবী ও বামপন্থী কর্মীদের আনাগোনা, তাদের বিভিন্ন আন্দোলনে অংশগ্রহণের চিত্রও দেখা যায়।
তথ্যচিত্রের প্রধান আকর্ষণ হলো, জন লেনন ও ইয়োকো ওনোর ব্যক্তিগত টেপ করা কথোপকথন। এর মাধ্যমে তাদের বন্ধু এবং পরিচিতজনদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো জানা যায়।
এই টেপগুলোতে তাদের ব্যক্তিগত ভাবনা, রাজনৈতিক আলোচনা এবং ইয়োকোর মেয়ে কিয়োকোর (Kyoko) জন্য তার আকুলতা বিশেষভাবে উঠে এসেছে। কিয়োকোকে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, যা ইয়োকোর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
এছাড়াও, ১৯৭২ সালের ৩০শে আগস্ট ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে (Madison Square Garden) অনুষ্ঠিত ‘উইলোব্রুক স্টেট স্কুলের’ (Willowbrook State School) জন্য আয়োজিত কনসার্টের ফুটেজও এই তথ্যচিত্রে যুক্ত করা হয়েছে।
এই কনসার্টে জন লেননের ‘ইন্সট্যান্ট কার্মা’ (Instant Karma) এবং ‘কাম টুগেদার’ (Come Together)-এর মতো বিখ্যাত গানগুলো পরিবেশন করা হয়। এই কনসার্টগুলো ছিল বিটলস থেকে আলাদা হওয়ার পর জন লেননের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কনসার্টগুলোর মধ্যে অন্যতম।
পরিচালক কেভিন ম্যাকডোনাল্ড (Kevin Macdonald) এই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে জন লেনন ও ইয়োকো ওনোর জীবনের একটি ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন, কিভাবে তারা রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক পরিবর্তনের মধ্যে নিজেদের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।
তথ্যচিত্রে ইয়োকো ওনোর মাতৃত্বের যন্ত্রণা এবং সমাজের চোখে তার ভুলভাবে চিত্রিত হওয়ার বিষয়গুলো বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
এই তথ্যচিত্রের মাধ্যমে জন লেনন ও ইয়োকোর জীবনের এমন কিছু দিক উন্মোচন করা হয়েছে যা আগে অনেকের কাছেই অজানা ছিল। তাদের সংগ্রামের গল্প, সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা, এবং নিজেদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা – সবকিছুই দর্শকদের নতুনভাবে ভাবাতে বাধ্য করবে।
‘ওয়ান টু ওয়ান: জন অ্যান্ড ইয়োকো’ শুধু একটি তথ্যচিত্র নয়, এটি একটি সময়ের প্রতিচ্ছবি, যা শিল্পী জীবনের গভীরতা ও মানবিক দিকগুলো তুলে ধরে।
তথ্য সূত্র: পিপল।