যুদ্ধবিধ্বস্ত চেরনোবিল: রাশিয়ার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত, সমাধানে ইউক্রেন!

ইউক্রেন যুদ্ধ: চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রে রাশিয়ার ড্রোন হামলা, সমঝোতা ভেঙে হামলার অভিযোগ

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এখনও চলছে, এবং এর মধ্যে চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রে রাশিয়ার ড্রোন হামলার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি মেরামতের চেষ্টা করছে ইউক্রেন। শনিবার দেশটির পরিবেশমন্ত্রী সভিতলানা হৃইনচুক জানান, তারা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মিলে কাজ করছেন, যাতে ওই এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে হওয়া ড্রোন হামলায় নতুন কনফাইনমেন্ট কাঠামোর বাইরের অংশে বড়সড় ক্ষতি হয়। এই কাঠামোটি ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনার পরে তৈরি হওয়া ‘সার্কোফ্যাগাস’-এর উপরে স্থাপন করা হয়েছিল।

এদিকে, তুরস্কের একটি সম্মেলনে রাশিয়া ও ইউক্রেনের শীর্ষ কূটনীতিকরা একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা জানান, রাশিয়া যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরেও প্রতিদিন ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সীমিত সময়ের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে রাশিয়া প্রায় ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র, ২,২০০টির বেশি বিস্ফোরক ড্রোন এবং ৬,০০০টির বেশি গাইডেড বোমা ইউক্রেনের ওপর ছুঁড়েছে, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল বেসামরিক নাগরিকরা। অন্যদিকে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানান, মস্কো সীমিত সময়ের জন্য হওয়া ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো মেনে চলছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়েও আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ এক সাক্ষাৎকারে জানান, শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে সম্ভবত বিভক্ত করা হতে পারে। তবে পরে তিনি তার এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন এবং জানান, তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যুদ্ধবিরতির পর ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য একটি স্থিতিশীল বাহিনী তৈরি করা যেতে পারে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ হস্তান্তরের বিনিময়ে দেশটির কাছ থেকে অস্ত্র চেয়ে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাশিয়া এই অভিযোগকে সরাসরি অস্বীকার না করলেও, তারা যুক্তরাজ্যের সমুদ্রের আশেপাশে তাদের নজরদারি চালানোর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ। তবে ক্রেমলিন জানিয়েছে, এই বৈঠকে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।

যুদ্ধ চলতে থাকায়, উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের কুপিয়ান্স্ক শহরে একটি আবাসিক ভবনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চারজন আহত হয়েছে এবং আরও তিনজন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া, ইউক্রেনের একজন এফ-১৬ পাইলট নিহত হয়েছেন।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *