ব্রিটিশ সংসদ সদস্যকে হংকংয়ে প্রবেশ করতে না দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাজ্যের একজন এমপি, ওয়েরা হপহাউসকে ব্যক্তিগত সফরে হংকংয়ে প্রবেশ করতে দিতে অস্বীকার করা হয়েছে।
জানা গেছে, তিনি সেখানে তার ছেলে ও নাতির সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলেন।
এই ঘটনার জেরে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বিষয়টি চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে উত্থাপনের ঘোষণা দিয়েছেন। ল্যামি বলেছেন ব্যক্তিগত সফরে যাওয়া একজন এমপিকে হংকংয়ে প্রবেশ করতে না দেওয়াটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।
তিনি দ্রুত এর কারণ জানতে চাইবেন।
ওয়েরা হপহাউস একজন লিবারেল ডেমোক্র্যাট এবং ইন্টার-পার্লামেন্টারি অ্যালায়েন্স অন চায়না (আইপ্যাক)-এর সদস্য। এই সংস্থাটি বেইজিংয়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে থাকে।
হপহাউস চীন সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং হংকংয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর দমন-পীড়নের বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন। হংকং কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের কোনো কারণ জানানো হয়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর পেছনে হপহাউসের চীন-বিরোধী অবস্থানই মূল কারণ।
হপহাউস বলেছেন, বিমানবন্দরে তাকে দীর্ঘ সময় ধরে বসিয়ে রাখা হয় এবং কোনো কারণ ছাড়াই অবশেষে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি জানান, তিনি সেখানে তার ছেলের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, যিনি ২০১৯ সাল থেকে হংকংয়ে বসবাস করছেন। এই ঘটনার পর ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অন্য সদস্যরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
লিবারেল ডেমোক্রেট দলের নেতা স্যার এড ডেভি এই ঘটনাকে ‘হৃদয়হীন’ এবং ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন।
আইপ্যাক এক বিবৃতিতে বলেছে, হপহাউসকে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণ সম্ভবত চীনের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে তার সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে তার যুক্ত থাকা। এটিকে তারা গণতান্ত্রিক নীতি ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি চরম অবমাননা হিসেবে দেখছেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও চীন সরকার বেশ কয়েকজন ব্রিটিশ এমপিকে তাদের দেশে প্রবেশ করতে দেয়নি। এদের মধ্যে আইপ্যাক সদস্য স্যার আইয়ান ডানকান স্মিথ ও নুসরত ঘানি এবং সাবেক নিরাপত্তা মন্ত্রী টম টুগেনহাট অন্যতম।
অন্যদিকে, এক সপ্তাহ আগে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ইসরায়েল সরকারের সমালোচনা করেছিলেন, কারণ তারা গাজায় সংঘাত নিয়ে মন্তব্য করার কারণে লেবার পার্টির এমপি আবতিসাম মোহামেদ ও ইউয়ান ইয়াংকে তাদের দেশে প্রবেশ করতে দেয়নি।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি (AFP)-এর পক্ষ থেকে হংকং সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান