মাহমুদ খলিল, একজন ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মী এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন।
সম্প্রতি, অভিবাসন আদালত তাকে দেশ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই এখনো চলছে, যা মানবাধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে নতুন করে আলো ফেলেছে।
আদালতের এই রায়ের মূল ভিত্তি হলো, কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী খলিলের কিছু ‘বিশ্বাস, বক্তব্য বা সংশ্লিষ্টতা’ যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিপন্থী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি স্মারকলিপিতে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও খলিলের আইনজীবীরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, এই লড়াই সহজে শেষ হবার নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায় অথবা তার বৈধ অভিবাসন স্ট্যাটাস না থাকে, তাহলে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা যেতে পারে।
খলিলের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা বোর্ডের কাছে আপিল করবেন এবং সম্ভবত তার পক্ষে আশ্রয়ের আবেদনও করবেন।
এই মামলার সঙ্গে জড়িত আইনজীবীদের মতে, এই আইনি প্রক্রিয়া কয়েক বছর পর্যন্ত চলতে পারে।
এর মধ্যেই, খলিলের আইনজীবীরা নিউ জার্সির একটি ফেডারেল আদালতে তার আটকের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি মামলা করেছেন।
তাদের মূল যুক্তি হলো, খলিলের বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘিত হয়েছে এবং তাকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের পর, খলিলের আইনজীবী মার্ক ভ্যান ডের হাউট বলেন, “আমরা মনে করি, এটা চূড়ান্ত রায় নয়।
তিনি আরও জানান, তারা খুব দ্রুতই এই বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নেবেন।
মাহমুদ খলিল, যিনি একজন গ্রিন কার্ডধারী, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্ত, গত বছর গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
এরপর তাকে আটক করা হয় এবং লুইজিয়ানায় একটি ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই মামলাটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিষয়ক আইনজীবী অ্যারন রিখলিন-মেলনিক, তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, খলিলের এই মামলার চূড়ান্ত পরিণতি এখনো অনেক দূরের পথ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই মামলার আপিল প্রক্রিয়া শেষ হতে বেশ কয়েক বছর লেগে যেতে পারে।
নিউ ইয়র্ক সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের প্রধান ডনা লাইবারম্যানের মতে, নিউ জার্সিতে খলিল সম্ভবত আরও সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার সুযোগ পাবেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন