পশ্চিমবঙ্গের একজন নতুন উদ্যোক্তা, যিনি প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপন করে জীবনকে নতুনভাবে উপলব্ধি করতে চান, এমন একজন ব্যক্তির গল্প তুলে ধরা হলো।
ডেভনের বাসিন্দা পপি ওকোটচা নামের এই নারী একজন বাস্তুসংস্থানিক বাগানবিদ এবং “এ ওয়াইল্ডার ওয়ে: হাউ গার্ডেনস গ্রো আস” বইটির লেখক। তার জীবনযাত্রা এবং বাগানের প্রতি ভালোবাসাই এই গল্পের মূল ভিত্তি।
পপির জীবন ছিল বহুমাত্রিক। নাইজেরিয়ান বাবা এবং ব্রিটিশ মায়ের সন্তান হিসেবে তিনি ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বেড়ে ওঠেন। শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি তার ঠাকুরমার বাগানের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে সবুজ গাছপালা আর ফুলের সমাহার ছিল।
মায়ের বাগানে তিনি প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য অনুভব করতেন। পরবর্তীতে, মডেলিংয়ের জগতে প্রবেশ করলেও, একসময় ফ্যাশন জগতের সঙ্গে তার মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়।
একদিকে শারীরিক অসুস্থতা, অন্যদিকে পরিবেশের উপর ফ্যাশন শিল্পের ক্ষতিকর প্রভাব—এসব কারণে তিনি নতুন পথের সন্ধান করেন।
পপির মতে, বাগান হলো এক ধরনের গুরু, যা আমাদের অনেক কিছু শেখায়।
পুরনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনের আগমন—বাগানের এই চক্রটি জীবনের প্রতিচ্ছবি। তার বাগানে কোনো গভীর খনন বা “নো-ডিগ” পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, যেখানে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে জৈব উপাদান মাটির সঙ্গে মিশে যায়।
তিনি তার বাগানে নানা ধরনের স্থানীয় গাছ এবং বুনো ফুল লাগিয়েছেন, যা কীটপতঙ্গ ও পাখিদের আশ্রয়স্থল তৈরি করে।
পপির জীবনের এই পরিবর্তন শুধু তার ব্যক্তিগত উপলব্ধি নয়, বরং বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে পরিবেশ রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
তিনি মনে করেন, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা জরুরি। আমাদের চারপাশে সবুজ স্থান তৈরি করা এবং প্রকৃতির প্রতি যত্নবান হওয়া—এটাই হলো আসল “আত্ম-অনুরাগ”।
তিনি তার বইয়ে দেখিয়েছেন কীভাবে একটি বাগান তৈরি করা যায়, যেখানে জীববৈচিত্র্যের (biodiversity) প্রতি মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।
এর জন্য রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে, স্থানীয় গাছ লাগানো এবং ঝোপঝাড় তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের বাগানগুলোতে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা লাগাতে হবে, যাতে কীটপতঙ্গ ও পাখিদের খাদ্য ও আশ্রয় মেলে।
পপির এই যাত্রা আমাদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা।
যারা প্রকৃতিকে ভালোবাসেন এবং পরিবেশের জন্য কিছু করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আসুন, আমরাও আমাদের চারপাশে সবুজ স্থান তৈরি করি এবং প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপন করি।
তথ্য সূত্র: The Guardian