স্বামীকে সপ্তাহে ২৭০০ ডলার বিল করেন স্ত্রী! ভাইরাল ভিডিওর আসল রহস্য ফাঁস

শিরোনাম: ঘরে থাকা মায়ের কাজ: টিকটকের মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিলেন এক মার্কিন মা।

মা হওয়া এবং গৃহস্থালীর কাজ— দুটোই যে কঠিন পরিশ্রম, তা বুঝিয়ে দিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক মা। সম্প্রতি, অ্যাম্বার ইগান নামের এক নারী টিকটকে একটি ভিডিও পোস্ট করে সাড়া ফেলেছেন, যেখানে তিনি দেখিয়েছেন একজন গৃহিণী হিসেবে তাঁর কাজের আর্থিক মূল্য কত।

তিন সন্তানের মা ইগান তাঁর স্বামীর সমর্থন পান, তবে তিনি চেয়েছিলেন অন্য মায়েদের কথা তুলে ধরতে, যাদের কাজ প্রায়ই স্বীকৃতি পায় না।

ভিডিওটিতে ইগান তাঁর কাজের একটি তালিকা তৈরি করেছেন এবং সেগুলোর আর্থিক মূল্য কত হতে পারে, তা উল্লেখ করেছেন। যেমন— প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার থালাবাসন ধোয়ার জন্য প্রতিবার ২০ ডলার, সপ্তাহে চারবার কাপড় ধোয়ার জন্য ৩৫ ডলার, সপ্তাহে দুইবার বাথরুম পরিষ্কারের জন্য প্রতিবার ৬০ ডলার, সপ্তাহে পাঁচ দিন দিনে দুই থেকে তিনবার মেঝে পরিষ্কারের জন্য প্রতিবার ১০০ ডলার, প্রতি সপ্তাহে ৮০০ ডলার হোমস্কুলিংয়ের খরচ, প্রতি সপ্তাহে শিশুদের আনা-নেওয়ার জন্য ১৫০ ডলার, প্রতি সপ্তাহে মুদি দোকান থেকে বাজার করার জন্য ৭৫ ডলার, প্রতিদিন দুপুরে ও রাতের খাবারের জন্য ব্যক্তিগত শেফের খরচ হিসেবে প্রতিবার ৫০ ডলার (সপ্তাহে ১০ বার), প্রতি সপ্তাহে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য ২০০ ডলার এবং প্রতিদিন ঘর ঝাড়ু দেওয়ার জন্য ১০ ডলার।

এই সমস্ত কাজের হিসাব করলে প্রতি সপ্তাহে তাঁর কাজের মোট মূল্য দাঁড়ায় ২,৭০০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী)।

এই ভিডিও বানানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল তাঁর স্বামীর প্রতি কোনো অভিযোগ জানানো নয়, বরং গৃহিণীদের মানসিক ও শারীরিক শ্রমের বিষয়টি তুলে ধরা। ইগান বলেন, “আমি চেয়েছিলাম, ঘরে থাকা মায়েরা যেন বুঝতে পারেন যে তাঁদের কাজও মূল্যবান।

তাঁরা যদি কোনো বেতন না পান, তার মানে এই নয় যে তাঁরা কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন না।”

ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয় এবং ৪৬ লক্ষের বেশি দর্শক এটি দেখেছে। ইগান স্পষ্ট করেছেন, এই ভিডিওটি নিছক একটি মজার ছলে তৈরি করা হয়েছিল, তবে অনেকেই তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন এবং সমর্থন জানিয়েছেন।

ইগান আরও যোগ করেন, “আমার স্বামী খুবই ভালো মানুষ। তাঁর প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। এই ভিডিওটি ছিল শুধুমাত্র একটি মজার বিষয়।”

এই ভিডিওতে ইগান মায়েদের মানসিক ও শারীরিক কষ্টের দিকগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, একজন মা যখন শিশুদের দেখাশোনা করেন, তখন একাকীত্ব অনুভব করতে পারেন।

ইগান অন্যান্য মায়েদের জন্য পরামর্শ দিয়ে বলেন, “নিজের জন্য কিছু সময় বের করুন, যা আপনাকে পুনরায় নিজের সাথে পরিচিত হতে সাহায্য করবে। এমন কিছু করুন যা আপনাকে ভেতর থেকে শান্তি এনে দেয়।

যেমন, আমি প্রতিদিন ক্রিস স্ট্যাপলটনের গান শুনি। এটা আমাকে আমার ‘আমি’কে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। আমি মা নই, স্ত্রী নই, আমি শুধু আমি।”

একজন গৃহিণী হিসেবে ইগান যে সমর্থন পান, তা অনেকের কাছে নাও থাকতে পারে। তাই, তিনি চান, গৃহিণীদের কাজকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, “আপনারা যদি কোনো বেতন নাও পান, তার মানে এই নয় যে আপনারা মূল্যবান কাজ করছেন না।

আমার স্বামী আমাকে সবসময় সমর্থন করেন, তাই আমি অন্যদের হয়ে কথা বলতে পারি। আমার মনে হয়, আমি ভাগ্যবান। আর এই উপলব্ধি আমাকে অন্যদের কথা ভাবতে সাহায্য করে।”

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *