গাজায় সর্বশেষ সক্রিয় হাসপাতালগুলোর একটির ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা, গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান জোরদারের মধ্যে সেখানকার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। রোববার ভোরে চালানো এই হামলায় গাজা শহরের আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ বেশ কয়েকটি অংশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জানা গেছে, এই হামলায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে জরুরি ভিত্তিতে রোগী সরানোর সময় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলার মাত্র ২০ মিনিট আগে তাদের সতর্ক করা হয়েছিল এবং এর পরেই রোগীদের রাস্তায় সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় তারা।
আল-আহলি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, অভ্যর্থনা কক্ষ এবং একটি জেনেটিক ল্যাবরেটরি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, হাসপাতালের পাশে অবস্থিত সেন্ট ফিলিপ’স চার্চেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা হামাসের একটি ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারকে’ লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে। তবে তারা এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। তারা আরও জানিয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির বিষয়টি তারা বিবেচনা করেছে।
এই হামলার ফলে গাজায় মানবিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে প্রায় ৪ লাখ মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। বর্তমানে গাজায় উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। যুদ্ধের কারণে হাসপাতালগুলোতে ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, আল-আহলি এবং ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে তাদের সাহায্য পাঠানোর অনুমতি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দেয়নি।
আল-আহলি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া এক রোগী মোহাম্মদ আবু নাসের সিএনএনকে জানান, হামলার সময় তিনি হাসপাতালের ভেতরেই ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, হাসপাতালের ভেতরেই আমাদের মৃত্যু হবে। এখন আমার কোনো চিকিৎসা পাওয়ারও উপায় নেই। চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ দেখছি না।”
জেরুজালেমের অ্যাংলিকান চার্চ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং জানিয়েছে, অক্টোবর মাস থেকে হাসপাতালটি পাঁচবার হামলার শিকার হয়েছে।
এদিকে, গাজায় আটকে পড়া এক মার্কিন-ইসরায়েলি নাগরিক ইদান আলেকজান্ডারকে নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস। ভিডিওতে তাকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সাহায্য চাইতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিওটি সম্প্রতি ধারণ করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন