মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে জো বাইডেনের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এবং ডেমোক্র্যাটদের পরাজয় নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি বই বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বইগুলোতে বাইডেনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শেষ বছরগুলোর ভেতরের কিছু বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, যা ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য বেশ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বইগুলোতে বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি তাঁর উপদেষ্টারাও নাকি তাঁর এই দুর্বলতা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। অনেক সময় তাঁরা বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেছেন।
কারো কারো মতে, বাইডেনের এই দুর্বলতা, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তাঁকে প্রস্তুত করতে যথেষ্ট ছিল না। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসকে প্রস্তুত করা হলেও, তাঁর দল নির্বাচনে পরাজিত হয়।
প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জোনাথন অ্যালেন ও অ্যামি পার্নেসের লেখা ‘ফাইট: ইনসাইড দ্য ওয়াইল্ডেস্ট ব্যাটেল ফর দ্য হোয়াইট হাউস’ এবং ক্রিস হুইপলের লেখা ‘আনচার্টেড: হাউ ট্রাম্প বিট বাইডেন, হ্যারিস, অ্যান্ড দ্য অডস ইন দ্য ওয়াইল্ডেস্ট ক্যাম্পেইন ইন হিস্টরি’। বইগুলোতে বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণার দুর্বলতা এবং হ্যারিসের প্রচারণা ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করা হয়েছে।
এমনকি হ্যারিসের রানিং মেট হিসেবে টিম ওয়ালজকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাইডেনের এই পরিস্থিতিতে পৌঁছানোর পেছনে তাঁর উপদেষ্টাদের একটি বড় ভূমিকা ছিল। অনেকে মনে করেন, বাইডেনের উপদেষ্টারা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি সম্পর্কে জেনেও, বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেছেন।
তাঁদের এই পদক্ষেপ হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।
বইগুলোতে বাইডেনের ঘনিষ্ঠজনদের কিছু বক্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে। হোয়াইট হাউসের সাবেক চিফ অব স্টাফ, রন ক্লেইন-এর মতে, বিতর্কের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বাইডেনকে বেশ ‘বিমূঢ়’ লাগছিল।
তিনি বিষয়গুলো সেভাবে বুঝতে পারছিলেন না।
এই ঘটনার পরে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, বয়স্ক রাজনীতিবিদদের রাজনীতিতে কত দিন থাকা উচিত। তাঁদের মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সময় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়, যা তাঁদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
প্রকাশিত বইগুলো শুধু বাইডেন বা ডেমোক্রেটিক পার্টির সমালোচনা নয়, বরং এটি রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, রাজনীতিবিদদের অবসরের একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা নির্ধারণ করা উচিত।
এছাড়াও, বইগুলোতে উঠে আসা তথ্যগুলো ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের পরাজয়ের কারণগুলো বুঝতে সহায়তা করবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান