পর্যটকদের পছন্দের জায়গা: কেন এখনই ব্রিজপোর্ট ভ্রমণ করবেন?

ব্রিডপোর্ট: ডরসেটের এক মনোমুগ্ধকর বাজার শহর

ব্রিটেন এর ডরসেট কাউন্টিতে অবস্থিত ব্রিডপোর্ট শহরটি তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব, মনোরম দৃশ্য এবং আকর্ষণীয় বাজারগুলির জন্য পরিচিত। যারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসেন, অথবা যারা পুরনো দিনের স্থাপত্য ও সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হন, তাদের জন্য এই শহরটি একটি আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:

ব্রিডপোর্টের ইতিহাস বহু পুরনো। ১৩শ শতকে রাজা তৃতীয় হেনরির অনুমোদনক্রমে এই শহরে বাজার বসানো শুরু হয়। সেই থেকে আজও পর্যন্ত শহরটি তার বাজারের জন্য সুপরিচিত। প্রতি বুধবার এবং শনিবার এখানে স্থানীয় মানুষের আনাগোনা দেখা যায়, যেখানে কাপড়, খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায়।

উপকূলের আকর্ষণ:

ব্রিডপোর্টের কাছাকাছি রয়েছে জুরাসিক উপকূলের একটি অংশ, যা বিশ্বজুড়ে ভূ-প্রকৃতিবিদ এবং পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার সোনার মতো হলুদ রঙের পাহাড় এবং সমুদ্রের ঢেউ পর্যটকদের মন জয় করে। গোল্ডেন ক্যাপ এখানকার সর্বোচ্চ সমুদ্র-পাহাড়, যেখান থেকে লাইম বে-এর বিস্তৃত দৃশ্য দেখা যায়। সিটাউন এবং ওয়েস্ট বে-র মতো জায়গাগুলোও এখানকার সমুদ্র উপকূলের আকর্ষণ বাড়িয়েছে। সিটাউনের সমুদ্র সৈকতে গেলে জীবাশ্ম খুঁজে পাওয়া যায়।

শপিং এবং কেনাকাটা:

যারা কেনাকাটা করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য ব্রিডপোর্ট একটি চমৎকার জায়গা। এখানকার ‘অ্যালিওয়েজ অ্যান্টিক মার্কেট’-এ বিভিন্ন ধরনের পুরাতন সামগ্রী পাওয়া যায়। এছাড়াও, সেন্ট্রাল মার্কেটে নীল-সাদা চীনামাটির বাসন, আসবাবপত্র, এবং আরও অনেক কিছুই পাওয়া যায়। যারা ভিনটেজ পোশাক পছন্দ করেন, তারা মেরি মুর’স ড্রেস-এর দোকানে যেতে পারেন, যেখানে ১৯৬০-এর দশকের পোশাক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ের আকর্ষণীয় পোশাকের সংগ্রহ রয়েছে।

খাবার-দাবারের জগৎ:

ব্রিডপোর্টে বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান রয়েছে। ‘সোলশাইন’ ক্যাফেতে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার বা রাতের খাবার উপভোগ করা যেতে পারে। ইতালীয় খাবার পছন্দ হলে ‘মারকাতো ইতালিয়ানো’ এবং ‘ব্রাসিকা ফোরনো’ তে যেতে পারেন। এছাড়াও, ‘হাইভ বিচ ক্যাফে’-তে তাজা সি-ফুড পাওয়া যায়।

প্রকৃতি এবং বাগান:

যারা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এখানে রয়েছে ম্যাপারটন হাউস। এখানকার বাগানগুলি খুবই সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা এবং ফুলের সমাহার দেখা যায়। এছাড়া, ‘জি অ্যান্ড টি গার্ডেন ট্যুরস’ নামের একটি সংস্থা ডরসেটের সুন্দর বাগানগুলি ঘুরে দেখায়।

আবাসন ব্যবস্থা:

এখানে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। ‘হনিপট কটেজ’-এর মতো সুন্দর এবং আরামদায়ক কুটিরগুলিতে থাকার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও, ‘দ্য সি-সাইড বোর্ডিং হাউস’-এর মতো হোটেলে থেকেও এখানকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যেতে পারে।

সবুজ প্রকৃতি:

ব্রিডপোর্ট এবং তার আশেপাশে রয়েছে সবুজ আর প্রকৃতির অপূর্ব সমাহার। এখানকার নির্মল পরিবেশ ভ্রমণকারীদের মন জয় করে।

সংক্ষেপে, ব্রিডপোর্ট একটি সুন্দর শহর, যা একইসঙ্গে ইতিহাস, সংস্কৃতি, প্রকৃতি এবং কেনাকাটার সুযোগ নিয়ে গঠিত। যারা একটু অন্যরকম ভ্রমণের স্বাদ নিতে চান, তাদের জন্য এই শহরটি একটি আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *