পারমাণবিক যুদ্ধের বিভীষিকা নিয়ে ১৯৮০-এর দশকে তৈরি হওয়া বিতর্কিত ব্রিটিশ চলচ্চিত্র ‘থ্রেডস’ (Threads)। এবার সেটি নতুন করে নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ‘অ্যাডোলসেন্স’ (Adolescence) খ্যাত ব্রিটিশ প্রযোজনা সংস্থা ওয়ার্প ফিল্মস।
সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি, বিভিন্ন দেশের মধ্যে উত্তেজনা এবং কর্তৃত্ববাদের উত্থানের প্রেক্ষাপটে, নির্মাতারা মনে করছেন, এই সময়ে দাঁড়িয়ে ছবিটি নতুন করে দর্শকদের কাছে তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরি।
১৯৮৪ সালে বিবিসি টু-তে প্রথমবার ‘থ্রেডস’ সম্প্রচারিত হওয়ার পর দর্শকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল। কেউ কেউ ছবিটিকে প্রামাণ্যচিত্র হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন, আবার কারো কারো মতে, উত্তর-অ্যাপোক্যালিপ্টিক শেফিল্ডের (Sheffield) ভয়াবহ চিত্রায়ণ কোনোভাবেই প্রচার করা উচিত হয়নি।
তবে ওয়ার্প ফিল্মসের প্রধান নির্বাহী মার্ক হারবার্ট জানিয়েছেন, এই পুনর্নির্মিত চলচ্চিত্রে মানুষের ভালো এবং খারাপ উভয় দিক ফুটিয়ে তোলা হবে।
হারবার্ট আরও বলেন, “আমি ডনকাস্টারে (Doncaster) বেড়ে উঠেছি। আমার বেড়ে ওঠা খনি শ্রমিকদের একটি কমিউনিটিতে, আর শেফিল্ড ছিল ১৫ মাইল দূরে। আমার ১৪ বছর বয়সে স্কুলে গিয়ে দেখি সবাই ছবিটি দেখেছে।
ছবিটি এতটাই বাস্তবসম্মত ছিল যে, অনেকে এটিকে সত্যি ঘটনা ভেবেছিল।”
ওয়ার্প ফিল্মসের ক্রিয়েটিভ অফিসার এমিলি ফেলার মনে করেন, “গত কয়েক বছরে আমরা আরও বেশি যুদ্ধ আমাদের জীবনে দেখছি…বিভিন্ন পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে, তাই ছবিটি নিয়ে পুনরায় কথা বলা অত্যন্ত সময়োপযোগী।”
ছবিটি নির্মাণে এখনো পর্যন্ত কোনো লেখক, পরিচালক বা শিল্পী চূড়ান্ত হয়নি। তবে ওয়ার্প ফিল্মস-এর দলটি মনে করে, ‘অ্যাডোলসেন্স’-এর মতোই ‘থ্রেডস’ ছবিতেও গভীরতা এবং বাস্তবতার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে।
বর্তমানে টেলিভিশন নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্মাতারা বিশ্বব্যাপী দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন বিষয় অনুসন্ধান করছেন।
ওয়ার্প ফিল্মস মনে করে, ‘থ্রেডস’ তেমনই একটি প্রকল্প হতে পারে, যা একটি ব্রিটিশ শহরের গল্প বললেও বিশ্বজুড়ে দর্শকদের কাছে পৌঁছে যাবে।
পরিচালক মিক জ্যাকসন জানিয়েছেন, মূল ‘থ্রেডস’ ছবিটি অনেকের কাছে উপভোগ্য ছিল না এবং সেটির সেই চেষ্টা ছিল না।
তিনি মনে করেন, “নিউক্লিয়ার যুদ্ধ-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে বিনোদনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করাটা একেবারেই ভুল।”
হারবার্ট আরও যোগ করেন, বাস্তবসম্মত চরিত্র এবং পরিচিত শহরের প্রেক্ষাপটে তৈরি হওয়া এই ধরনের প্রকল্প দর্শকদের আকৃষ্ট করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান