যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে বাঁচাতে রাশিয়ার তেলের দামে আঘাত হানছে মিত্র দেশগুলো!

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে, রাশিয়ার তেল রপ্তানির ওপর বিদ্যমান মূল্যসীমা আরও কঠোর করার কথা ভাবছে যুক্তরাজ্য এবং জি-৭ মিত্র দেশগুলো। এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার রাজস্ব আয় সীমিত করা।

বর্তমানে ব্যারেল প্রতি তেলের দামের ঊর্ধ্বসীমা ধরা হয়েছে ৬০ মার্কিন ডলার (প্রায় ৭,০০০ টাকা)।

জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববাজারে তেলের দামে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্কের প্রভাবও রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে, জি-৭ এবং যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা রাশিয়ার তেলের দাম কমানোর বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছেন।

২০২২ সালের শেষ দিকে যখন তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারের বেশি ছিল, তখন রাশিয়ার তেল রপ্তানির ওপর এই সীমা আরোপ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল, ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর অর্থায়ন সীমিত করা।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপটি বর্তমানে ‘অর্থহীন’ হয়ে পড়েছে, কারণ রাশিয়া বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে স্বাভাবিক বাজার দরে তেল বিক্রি করতে পারছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া পুরনো তেল ট্যাংকারের একটি ‘ছায়া বহর’ ব্যবহার করছে, যার মাধ্যমে তারা এই মূল্যসীমা এড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে, জি-৭ এবং ইইউ-এর দেশগুলো রাশিয়ার কাছ থেকে ৬০ ডলারের বেশি দামে তেল কিনতে পারছে না অথবা এই মূল্যের বেশি দামে হওয়া কোনো চুক্তিতে সহায়তাও করতে পারছে না।

কিন্তু রাশিয়া বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে তাদের তেল বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাজ্য বর্তমানে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে মিলে কাজ করছে, যাতে এই মূল্যসীমা ব্যবহার করে ইউক্রেনকে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে রক্ষা করা যায় এবং একইসঙ্গে রাশিয়াকে শান্তি আলোচনায় বসতে বাধ্য করা যায়।

ওয়াশিংটন ডিসির সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ফেলো, ক্লেটন সিগেল মনে করেন, জি-৭ দেশগুলোর উচিত রাশিয়ার ওপর চাপ আরও বাড়ানো। তিনি বলেন, ৬০ ডলারের নিচে দাম নির্ধারণ করে মস্কোকে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্ববাজারে দাম কমলে, দেশের বাজারেও জ্বালানি তেলের দাম কমার একটা সুযোগ তৈরি হয়।

তবে, এই দাম কমার বিষয়টি আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক কারণের ওপরও নির্ভরশীল।

সুতরাং, রাশিয়ার তেলের ওপর মূল্যসীমা আরও কঠোর করার বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি জ্বালানি তেলের দাম এবং দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *