যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত কিয়াহোগা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক: বাংলাদেশের ভ্রমণ প্রেমীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত।
যারা প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে ভালোবাসেন এবং নতুন কিছু দেখতে চান, তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের কিয়াহোগা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক একটি অসাধারণ গন্তব্য হতে পারে। বিশাল জলপ্রপাত, সবুজ বনভূমি, আর নানা ধরনের বিনোদনের সুযোগ—সবকিছু মিলিয়ে এই পার্কটি ভ্রমণকারীদের মন জয় করে।
বাংলাদেশের ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য এই পার্কটি কেমন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কিয়াহোগা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক: এক নজরে।
ক্লিভল্যান্ড শহর থেকে মাত্র ৪০ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত এই পার্কটি প্রায় ৩৩,০০০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এখানে প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা সম্ভব। এক সময়ের শিল্প-দূষণের শিকার কিয়াহোগা নদীকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, যা এখন নানা ধরণের বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল।
কী আছে এখানে?
* ব্র্যান্ডিওয়াইন জলপ্রপাত: এই পার্কের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি হলো ব্র্যান্ডিওয়াইন জলপ্রপাত। প্রায় ৬০ ফুট উঁচু থেকে জলরাশি নিচে পড়ার দৃশ্য যে কারো মন জয় করে নেয়।
* কিয়াহোগা ভ্যালি সিনিক রেলরোড: এই ট্রেনে চড়ে পার্কের সবুজ বন ও কিয়াহোগা নদীর পাশ দিয়ে ভ্রমণ করা এক দারুণ অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে, শরৎকালে যখন গাছের পাতাগুলো রঙ বদলায়, তখন এই ভ্রমণ আরও মনোরম হয়ে ওঠে।
* ওয়াইন এবং সঙ্গীতের স্বাদ: এখানে একটি ওয়ার্কিং ভিনইয়ার্ড (vineyard) বা আঙ্গুর বাগান রয়েছে, যেখানে স্থানীয় ওয়াইন (যারা আগ্রহী) উপভোগ করা যেতে পারে। এছাড়াও, এখানে লাইভ মিউজিকেরও ব্যবস্থা আছে।
* হাইকিং এবং বাইকিং: যারা ট্রেকিং বা বাইকিং ভালোবাসেন, তাদের জন্য এখানে রয়েছে ৮৭ মাইল দীর্ঘ একটি পথ, যা পুরনো একটি ক্যানাল বা খালের পাশ দিয়ে গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন হাইকিং ট্রেইল তো আছেই।
* বন্যপ্রাণী: এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীও দেখতে পাবেন, যেমন—বিভার, জলহস্তী এবং নানা প্রজাতির পাখি।
কখন যাবেন?
কিয়াহোগা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে ভ্রমণের সেরা সময় হলো—
* বসন্ত: এপ্রিল-মে মাসে এখানকার প্রকৃতি নতুন রূপে সজ্জিত হয়।
* গ্রীষ্ম: জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আবহাওয়া বেশ মনোরম থাকে।
* শরত: সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে গাছের পাতাগুলো রঙিন হয়ে ওঠে, যা এই পার্কের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে।
* শীত: শীতকালে এখানে স্কিইং এবং স্নোশুয়িংয়ের মতো শীতকালীন খেলা উপভোগ করা যেতে পারে।
কীভাবে যাবেন?
কিয়াহোগা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে যাওয়া বেশ সহজ। ক্লিভল্যান্ড হপকিন্স আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অথবা আকন-ক্যান্টন আঞ্চলিক বিমানবন্দর থেকে এখানে সরাসরি গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া যেতে পারে।
কোথায় থাকবেন?
এখানে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের বিকল্প রয়েছে:
* ভ্যালি ওভারলুক: গ্ল্যাম্পিং এবং কটেজ-এর সুবিধা সহ একটি নতুন স্থান।
* ইন অ্যাট ব্র্যান্ডিওয়াইন ফলস: এটি ১৮৪৮ সালে নির্মিত একটি পুরনো হোটেল, যা ব্র্যান্ডিওয়াইন জলপ্রপাতের কাছে অবস্থিত।
* ফিডেলিটি হোটেল: ক্লিভল্যান্ডে অবস্থিত একটি আধুনিক হোটেল।
খাবার-দাবারের ব্যবস্থা
* পেনিনসুলা কফি হাউস: হালকা খাবার এবং কফি উপভোগ করার জন্য একটি ভাল জায়গা।
* সারাহ’স ভিনইয়ার্ড: এখানে ওয়াইনের সাথে বিভিন্ন ধরনের খাবার উপভোগ করা যেতে পারে।
* উইঙ্কিং লিজার্ড ট্যাভার্ন: এখানকার কমফোর্ট ফুড এবং বিয়ার খুবই জনপ্রিয়।
কিয়াহোগা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক: বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হতে পারে। যারা প্রকৃতি ভালোবাসেন এবং নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।
তথ্য সূত্র: Travel and Leisure