শিরোনাম: ব্ল্যাক মিররের নতুন পর্বে ৯০ দশকের গেমিং সংস্কৃতি: প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে এক গভীর আলোচনা
ব্ল্যাক মিরর, এই জনপ্রিয় টিভি সিরিজের নতুন সিজনে (৭ম সিজন) মুক্তি পাওয়া ‘প্লেথিং’ নামক একটি পর্ব বর্তমানে দর্শক এবং সমালোচকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। নব্বইয়ের দশকের গেমিং জগৎ এবং প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া এই পর্বটি, সেই সময়ের গেমিং সংস্কৃতিকে নতুন করে তুলে ধরেছে।
সেই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence – AI) এবং ভার্চুয়াল জগতের বিপদ সম্পর্কেও সতর্ক করেছে। গল্পের শুরুটা একজন গেম সাংবাদিক ক্যামেরন ওয়াকারকে নিয়ে, যে কিনা একটি ভার্চুয়াল পেট সিমুলেশন গেম ‘থ্রংলেটস’-এর কোড চুরি করে।
গেমটি নিজের বাড়িতে খেলার পরে, সে বুঝতে পারে, পর্দায় থাকা সুন্দর প্রাণীগুলোর আসল উদ্দেশ্য তার কল্পনার চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। এই গল্পে মূলত প্রযুক্তির আগ্রাসন এবং মানুষের অসহায়তা তুলে ধরা হয়েছে।
নব্বইয়ের দশকের গেমিং সংস্কৃতি এবং ‘ব্ল্যাক মিরর’-এর এই পর্বের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। এই সিরিজের স্রষ্টা, চার্লি ব্রুকার নিজেও একসময় ‘পিসি জোন’ নামক একটি গেমিং ম্যাগাজিনে কাজ করতেন।
‘প্লেথিং’ পর্বে ‘পিসি জোন’-এর অফিসের কিছু দৃশ্য দেখানো হয়েছে, যা বাস্তবতার থেকে বেশ ভিন্ন ছিল। ম্যাগাজিনটির অফিসের পরিবেশ নিয়ে যারা কাজ করেছেন, তাদের মতে, বাস্তবে অফিসটি এত পরিপাটি ছিল না।
বরং একটি পুরনো, অপরিষ্কার পরিবেশে কাজ চলত। গেমের বিষয়বস্তু নির্বাচনে অবশ্য নির্মাতাদের মুন্সিয়ানা ছিল চোখে পড়ার মতো।
পর্বটিতে ‘ডুম’, ‘সিস্টেম শক’ এবং ‘ম্যাজিক কার্পেট’-এর মতো জনপ্রিয় গেমগুলির উল্লেখ রয়েছে। এমনকি, ‘থ্রংলেটস’ গেমটির ধারণা সম্ভবত ১৯৯৬ সালের ‘ক্রিয়েচারস’ নামক একটি গেম থেকে অনুপ্রাণিত।
‘ক্রিয়েচারস’ ছিল একটি জটিল ভার্চুয়াল লাইফ সিমুলেশন, যেখানে খেলোয়াড়দের কিছু প্রাণীর যত্ন নিতে হতো। এই গেমটি তৈরি করেছিলেন স্টিভ গ্র্যান্ড।
তিনি পরবর্তীতে রোবোটিক্সের (robotics) জগতে খ্যাতি অর্জন করেন। ‘ব্ল্যাক মিরর’-এর এই পর্বটি প্রযুক্তি এবং ভিডিও গেমের জগৎকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে।
এই ধরনের গল্পগুলো দর্শকদের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে। কারণ, প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির যুগে, এর ভালো এবং খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা জরুরি। ‘প্লেথিং’ পর্বটি সেই কাজটিই খুব ভালোভাবে করেছে।
মোটকথা, ‘প্লেথিং’ পর্বটি একদিকে যেমন পুরনো দিনের গেমিংয়ের নস্টালজিয়াকে ফিরিয়ে এনেছে, তেমনি প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ভার্চুয়াল জগতের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে, এটি দর্শকদের মধ্যে গভীর আগ্রহ তৈরি করেছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান