টাইটানিক: এক শতাব্দীরও বেশি সময় পর কেমন আছে ডুবে যাওয়া জাহাজটি?
১ এপ্রিল, ১৯১২। আটলান্টিক মহাসাগরে এক বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে গিয়েছিল বিশাল জাহাজ টাইটানিক। সেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৫০০ জনের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আজও এই ট্র্যাজেডি আলোচনার বিষয়।
সম্প্রতি জানা গেছে, দুর্ঘটনার ১১৩ বছর পরেও টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ সেই আটলান্টিক মহাসাগরেই রয়ে গেছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার রূপ বদলেছে, ঘটছে ক্ষয়।
১৯৮৫ সালে সমুদ্রবিজ্ঞানী রবার্ট ব্যালার্ড টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, পর্যটকদের আনাগোনায় জলমগ্ন এই জাহাজের ক্ষতি হচ্ছে।
বর্তমানে কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূল থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে, সমুদ্রের প্রায় ১২,৫০০ ফুট গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। এই স্থানে আলো প্রবেশ করে না এবং জীবনের অস্তিত্বও খুবই কম।
ব্রিটিশ সরকারের মতে, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ একটি স্মৃতিস্তম্ভ, তাই এটিকে তোলার কোনও পরিকল্পনা নেই।
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের বিভিন্ন অংশ ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, আগামী ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে আমেরিকার লাস ভেগাসে এই জাহাজের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে একটি প্রদর্শনী শুরু হতে চলেছে।
এই প্রদর্শনীতে টাইটানিকের ৩০০টির বেশি নিদর্শন উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ১৫ টন ওজনের ‘বিগ পিস’ নামের একটি অংশ।
সমুদ্রে দীর্ঘদিন ধরে থাকার কারণে টাইটানিকের কাঠামোর ক্ষয় হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, লোহার তৈরি জাহাজটির উপরিভাগের অংশটি এখন এতটাই দুর্বল যে এটি তোলার চেষ্টা করলে ভেঙে যেতে পারে।
তাছাড়া, সমুদ্রের কাদামাটিও এটিকে আরও গভীরে দেবে দিয়েছে।
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের আশেপাশে কোনো মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সমুদ্রের গভীরতা এত বেশি যে, সেখানে হাড়গুলো ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের গভীরতার নিচে গিয়ে গলে যায়।
টাইটানিক জাহাজটি ছিল সেই সময়ের সবচেয়ে বড় এবং বিলাসবহুল জাহাজগুলোর মধ্যে একটি। এটি ছিল প্রযুক্তি ও বিলাসিতার প্রতীক, যা এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়।
এত বছর পরেও টাইটানিকের গল্প মানুষের মনে গভীর রেখাপাত করে।
তথ্য সূত্র: পিপল