নিউ ইয়র্কের হাডসন নদীতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যু, ট্যুর অপারেটর বন্ধ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে একটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পাইলটসহ ছয়জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে ম্যানহাটন থেকে আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণ পরেই হেলিকপ্টারটি হাডসন নদীতে বিধ্বস্ত হয়।
ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই নিউ ইয়র্ক হেলিকপ্টার ট্যুরস নামক হেলিকপ্টার পরিষেবাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন একজন পাইলট এবং স্পেনের একটি পরিবারের পাঁচ সদস্য। পরিবারটি নিউ ইয়র্ক ভ্রমণে এসেছিল।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন ৪ বছর বয়সী ভিক্টর, ৮ বছর বয়সী মার্সিডিজ এবং ১০ বছর বয়সী অগাস্টিন সহ অগাস্টিন এসকোবার ও তাঁর স্ত্রী মার্স কামপ্রুবি মন্টাল। জানা গেছে, মন্টাল তাঁর ৪০তম জন্মদিন উদযাপন করছিলেন।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (এনটিএসবি)। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটিতে ফ্লাইট ডেটা রেকর্ড করার মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
এই কারণে দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত করা যায়নি।
নিউ ইয়র্কের সিনেটর চাক শুমার এফএএকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “নিউ ইয়র্ক শহরের হেলিকপ্টার ট্যুর কোম্পানিগুলোর একটি ভয়ংকর ইতিহাস রয়েছে। বিগত কয়েক বছরে ১১ জন নিহত হয়েছেন, এবং প্রায়শই দেখা যায় কোম্পানিগুলো এফএএর নিয়ম লঙ্ঘন করে মুনাফার দিকে বেশি মনোযোগ দেয়।”
এদিকে, দুর্ঘটনার পর নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস হেলিকপ্টার ট্যুর বন্ধের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন।
তিনি বলেন, “এটি শহরের ব্যবসার একটি আকর্ষণ, মানুষজন এখানে আসে এবং আকাশ থেকে শহরটিকে দেখে।
তবে, নিউ জার্সির মেয়র স্টিভ ফুলোপ এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে বলেছেন, “নিউ ইয়র্ক সিটি এবং নিউ জার্সির ওপর দিয়ে আকাশপথে যানবাহনের অতিরিক্ত চলাচল উদ্বেগের কারণ।
এমন অবস্থায় যেকোনো সময় আবারও দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।”
এই ঘটনার কয়েক দিন আগে, নিউ ইয়র্কের কোপাক এলাকায় একটি ছোট বিমান দুর্ঘটনায় আরও ছয়জন নিহত হন।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন ক্যারেন্না গ্রফ নামের একজন প্রাক্তন কলেজ ফুটবল খেলোয়াড় এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
আশা করা হচ্ছে, এনটিএসবির তদন্তের মাধ্যমে দ্রুতই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান