যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে, জামযাম শরণার্থী শিবিরে আক্রমণের পর সেখানকার মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সশস্ত্র মিলিশিয়াদের হামলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়, পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের খবর জানতে পারছে না।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে।
খবর অনুযায়ী, সুদানের দারফুর অঞ্চলের জামযাম শরণার্থী শিবিরে সম্প্রতি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলা চালায়। এই হামলায় বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর থেকেই এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সংযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে, সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বাইরের জগতের কোনো যোগাযোগ নেই।
বর্তমানে, জামযাম শরণার্থী শিবিরে প্রায় সাত লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই গৃহহীন এবং উদ্বাস্তু।
এই পরিস্থিতিতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় সেখানে খাদ্য, চিকিৎসা ও অন্যান্য জরুরি ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আহতদের হাসপাতালে নেওয়া এবং হতাহতের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করাটাও এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চিকিৎসা সহায়তাকারী সংস্থাগুলো জানিয়েছে, আরএসএফ-এর হামলায় এরই মধ্যে ত্রাণকর্মীরাও নিহত হয়েছেন। এছাড়া, সেখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রধানের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।
প্রতিবেশী তাওয়ালা শরণার্থী শিবিরে কয়েকদিনের মধ্যে প্রায় দশ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতিও অত্যন্ত শোচনীয়।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো অবিলম্বে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
একইসঙ্গে, লন্ডনে শান্তি আলোচনার মাধ্যমে আরএসএফ এবং সুদানিজ সেনাবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্থাপনের চেষ্টা চলছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলে আক্রান্ত মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছানো সহজ হবে এবং হতাহতের সঠিক হিসাব রাখা সম্ভব হবে।
বর্তমানে স্যাটেলাইট ফোন ও স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে কিছু সীমিত যোগাযোগের ব্যবস্থা করা গেলেও, তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং নির্ভরযোগ্য নয়।
সেখানের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান