বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন মেলিন্ডা গেটস: যা শুনলে চোখে জল আসবে!

বিল গেটস থেকে বিবাহবিচ্ছেদ: কঠিন এক অধ্যায় পেরিয়ে আসা মেলিন্ডা গেটস।

যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল এবিসির ‘গুড মর্নিং আমেরিকা’ অনুষ্ঠানে সম্প্রতি উপস্থিত হয়েছিলেন মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস। সেখানে তিনি তার নতুন বই ‘দ্য নেক্সট ডে’-এর প্রচারের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন এবং বইটিতে আলোচিত বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন।

আলোচনার এক পর্যায়ে উঠে আসে বিল গেটসের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের প্রসঙ্গ।

মেলিন্ডা জানান, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তবে, বইটিতে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে লেখার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি যদি আমার ভেতরের আসল মানুষটাকে তুলে ধরতে চাই, তবে মানুষকে জানাতে হবে আমি এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি।”

তিনি আরও যোগ করেন, “কোনো পরিবারের জন্যই বিবাহবিচ্ছেদ সুখকর নয়। আমি আমার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি তুলে ধরেছি। এমন ঘটনার শিকার হোক, এমনটা আমি কখনোই চাই না।

দুর্ভাগ্যবশত অনেক পরিবারকে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়। এটি একটি বড় পরিবর্তন। আমার জন্য, অবশ্যই এটি ছিল বেদনাদায়ক, তবে আমি কিছু শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছি এবং এর মধ্য দিয়ে আমার বৃদ্ধিও ঘটেছে।”

২০২১ সালে বিল ও মেলিন্ডা গেটস এক যৌথ বিবৃতিতে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা করেন।

বিবৃতিতে তারা বলেছিলেন, “দীর্ঘ চিন্তা ও সম্পর্কের ওপর অনেক কাজ করার পরে, আমরা আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তারা আরও জানান, “আমরা এখনো আমাদের ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব, তবে আমরা মনে করি না যে আমরা আর এক দম্পতি হিসেবে একসঙ্গে পথ চলতে পারব।”

বিবাহবিচ্ছেদের পর মেলিন্ডা গেটস নতুন জীবনকে স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি বর্তমানে তার জীবনকে ‘অসাধারণ’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি চাই মানুষ দেখুক, আমি বিবাহবিচ্ছেদের পরেও ভালো আছি।”

‘দ্য নেক্সট ডে’ বইটিতে মেলিন্ডা গেটস তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু মুহূর্ত নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ, মা ও ঠাকুরমা হওয়া এবং গেটস ফাউন্ডেশন ত্যাগ করা।

তিনি নতুন জীবনের শুরুতে অর্জিত শিক্ষাগুলোও সবার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন।

নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে মেলিন্ডা বলেন, “আমি কাউকে কোনো পরামর্শ দিতে চাই না।”

তবে, ৬০ বছর বয়সে তিনি অনেক কিছু দেখেছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করেছেন যে “একটি ভিন্ন জীবন তৈরি করতে সাহস লাগে।”

বইটিতে সবচেয়ে কঠিন অধ্যায় ছিল বিল গেটসের সঙ্গে তার ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানা।

মেলিন্ডা বলেন, “বাস্তবতা তুলে ধরাটা আমার জন্য জরুরি ছিল। আশা করি, এটি অন্য কারও উপকারে আসবে।”

বিবাহবিচ্ছেদ জীবনের একটি অংশ, কিন্তু মেলিন্ডার বইয়ের প্রতিটি বিবরণ অনিশ্চয়তার অনুভূতি এবং নিজেকে না হারিয়ে কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়, সেই বিষয়ে আলোকপাত করে।

মেলিন্ডা বলেন, “পরিবর্তন ভীতিকর, আনন্দদায়ক বা উভয়ই হতে পারে। তবে সবকিছুই সম্ভব।

এবং যখন আপনি অন্য প্রান্তে পৌঁছবেন, তখন আপনি ভালো থাকবেন।”

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *