মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়ছে, যা কভিড-১৯ মহামারীর শুরুর দিকের পরিস্থিতিকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। নিউ ইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের এক জরিপে এই উদ্বেগের চিত্র উঠে এসেছে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি সতর্কবার্তা।
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অফ নিউ ইয়র্কের মার্চ মাসের ভোক্তা প্রত্যাশা জরিপ অনুযায়ী, আগামী এক বছরের মধ্যে বেকারত্বের হার আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৪৪ শতাংশ। এটি ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে সর্বোচ্চ। এই জরিপে অংশগ্রহণকারীরা তাদের নিজেদের চাকরি হারানোর সম্ভাবনাকে ১৫.৭ শতাংশ হিসেবে দেখছেন, যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এই উদ্বেগ শুধু চাকরির নিরাপত্তা নিয়েই নয়, বরং মূল্যস্ফীতি নিয়েও দেখা যাচ্ছে। জরিপে দেখা গেছে, ভোক্তারা আগামী এক বছরের জন্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৩.৬ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। এটি গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি এবং শুল্ক বৃদ্ধিও একটি কারণ।
যদিও স্বল্পমেয়াদী এই উদ্বেগের বিপরীতে, দীর্ঘমেয়াদে মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তিন বছর পর মূল্যস্ফীতি ৩ শতাংশ এবং পাঁচ বছর পর তা ২.৯ শতাংশে স্থির থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভ এই বিষয়গুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
কারণ, মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী যদি বাজারে দাম বাড়ে, তাহলে তারা এখনই বেশি খরচ করতে পারে অথবা বেশি বেতন চাইতে পারে। এর ফলে ব্যবসায়ীরাও তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হতে পারে, যা সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ, এর ফলে মানুষের মধ্যে খরচ করার প্রবণতা কমতে পারে, যা ব্যবসায়িক বিনিয়োগ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্যও উদ্বেগের কারণ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন